দুর্বল কোম্পানির দৌড়ে ৬টি কোম্পানি এগিয়ে

dseনিজস্ব প্রতিবেদক :

বাড়ছে অল্প মুলধনী কোম্পানির শেয়ার দর। কোনভাবেই এসব কোম্পানির শেয়ার দরের গতি থামছে না। কারসাজির কারণেই বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ঝুঁকিপূর্ণ এবং বাজার পরিস্থিতি নেতিবাচক। এসব কোম্পানিরই শেয়ার দর অতি উচ্চমূল্যে লেনদেন হচ্ছে।

লেনদেনর পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা গেছে, দিন দিন বেড়েই চলেছে দুর্বল কোম্পানিগুলোর দৌরাত্ম্য। পুঞ্জীভূত লোকসান থাকা সত্ত্বেও ছয় কোম্পানির শেয়ার দর উল্লেখযোগ্য হারে লেনদেন হচ্ছে। কোম্পানিগুলো হলো- আজিজ পাইপস, বিডি অটোকার্স, রেইনউইক যজ্ঞেশ্বর, জেমিনি সি ফুডস, রহিমা ফুডস এবং জুট স্পিনার্স।

এসব কোম্পানির মোট লোকসানের পরিমাণ ৭৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। কোনো কোনো কোম্পানির মূলধনের তুলনায়ও লোকসানের পরিমাণ অনেক বেশি। পুঞ্জীভূত লোকসান সত্ত্বেও এসব কোম্পানির শেয়ার দর ২০ টাকারও বেশি দরে লেনদেন হচ্ছে। কোনো কোম্পানি নামেমাত্র ডিভিডেন্ড দিচ্ছে। আবার কোন কোম্পানি দিলেও দীর্ঘদিন ধরে ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করছে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের। বাড়ছে এসব কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেইনউইক যজ্ঞেশ্বরের পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় লোকসানের পরিমাণ বেশি। বর্তমানে কোম্পানিটির লোকসানের পরিমাণ ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ২০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন মাত্র ২ কোটি টাকা। সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ২১৬ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানির বর্তমান পিই ৪৯.৭২ পয়েন্ট। কোম্পানিটি প্রতিবছরই ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। সর্বশেষ ২০১৪ অর্থবছরে ২২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। কোম্পানির ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৫১.০৭ শতাংশ সরকার এবং ৪৮.৯৩ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

আজিজ পাইপস : বর্তমানে লোকসানের পরিমাণ ৩৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন মাত্র ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ২১ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। ১৯৮৬ সালে বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানির বর্তমান পিই নেই। কোম্পানিটি গত ১৩ বছর ধরে ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না। এ কোম্পানির ৪৮ লাখ ৫০ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৪০.২২ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ৬.৫৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৫৩.২৩ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

বিডি অটোকারস : লোকসানের পরিমাণ ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন মাত্র ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ২০.৭০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। ১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানির বর্তমান পিই ১৪৮.৫৭ পয়েন্ট। কোম্পানিটি ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে। সর্বশেষ ২০১২ সালে ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এ কোম্পানির ৩৬ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৮টি শেয়ারের মধ্যে ৪৬.৮৭ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ২.০৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৫১.০৮ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

জুট স্পিনার্স : লোকসানের পরিমাণ ১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন মাত্র ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ৫১ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। ১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া পাট খাতের এ কোম্পানির বর্তমান পিই নেই। সর্বশেষ ২০১২ অর্থবছরে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এ কোম্পানির ১৭ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৩৯.৮২ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ২৯.৩৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৩০.৮২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

রহিমা ফুড : লোকসানের পরিমাণ ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ২৫ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন মাত্র ২০ কোটি টাকা। সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ৩৪.৮০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের এ কোম্পানির বর্তমান পিই নেই। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১৩ অর্থবছরে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

জেমিনি সি ফুড : লোকসানের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ২ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। সর্বশেষ দর অনুযায়ী কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ১৯৩ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের এ কোম্পানির বর্তমান পিই নেই। কোম্পানিটি ২০১৪ অর্থবছরে ৭.৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *