সূচকের মাপকাঠিতে নভেম্বরের আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজার

worldমোঃ তরিকুল ইসলাম :

ষাঁড়ের লড়াই আর ভাল্লুকের জ্বর। এটাই যেন শেয়ারবাজারের সার্বিক চিত্র। সূচক উঠবে আবার সূচক নামবে। চিরন্তন এই রীতি মেনেই শেয়ারবাজারে পুঁজি ঢালেন বিনিয়োগকারীরা। সূচকের পতন ঘটলে বিনিয়োগকারীরা যেমন বাজারবিমূখ হয়, তেমনিভাবে সুচকের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটলে তার পতনও অনিবার্য। নভেম্বর মাসে এশিয়া, আমেরিকা এবং ইউরোপের শেয়ারবাজারগুলো ছিল বিনিয়োগকারীদের আশা-নিরাশার দোলাচলে।

পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, সূচকের অত্যধিক বৃদ্ধি বা হ্রাস উভয়ই পুঁজিবাজারের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। নভেম্বর মাসে এশিয়া, আমেরিকা এবং ইউরোপ এই তিনটি অঞ্চলের মধ্যে এশিয়ার জাপান থেকে শুরু করে ভারত অবধি ছিল রেকর্ড ভাঙ্গা লেনদেনের ছড়াছড়ি। সেই সাথে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে সুচক। জাপানের নিক্কেই, হংকং এর হ্যাংসেং বা চীনের সাংহায় সবগুলো শেয়ারবাজারই মোটামুটি ভালো ছিল।

বাজিমাত করেছে ভারতের সেনসেক্স ইন্ডেক্স। মাসের শুরুতে যেখানে সেনসেক্স ইন্ডেক্স ছিল ২৭,০০০ পয়েন্টের অনেক নিচে সেখানে মাস শেষে তা দাঁড়িয়েছে ২৮,৬০০ পয়েন্টে। এছাড়া নভেম্বরে এশিয়ার বাজারে আলোচনায় ছিল জাপান সরকারের অর্থনৈতিক প্রনোদনা, ভারতের শেয়ার বাজার থেকে কিংফিসার এয়ারলাইন্স কে বহিষ্কার এবং সাংহায়-হংকং শেয়ারবাজার যুক্ত হবার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা।

অন্যদিকে ইউরোপের শেয়ার বাজার বিনিয়োগকারিদের কেবল হতাশই করেছে। মাসের মধ্যভাগে বাজার কিছুটা শান্ত হলেও শেষমেশ তলানীতেই থেকে গেছে সূচক। বড় ধরনের পতনের ঘটনা ঘটেছে লন্ডন শেয়ারবাজারে। পুরোমাসে লন্ডনের FTSE 100 সুচক মাত্র একবারের জন্য ৬,৮০০ পয়েন্টে পৌঁছালেও মাস শেষে তা ৬,৫০০ পয়েন্টের সামান্য উপরে রয়েছে। লেনদেনের এই মন্দাভাব ছিল জার্মানি, ইতালিসহ ইউরোপের অন্যান্য শেয়ারবাজারে। অর্থাৎ এশিয়ার যেমন ছিল ষাড়েল লড়াই বিপরীতভাবে ইউরোপে ছিল ভাল্লুকের জ্বর।

তবে মাঝামাঝি ছিল আমেরিকার শেয়ারবাজার। মাসের শুরুটা হয়েছিল সূচকের মিশ্রভাবের মধ্যদিয়ে এবং একই রকম অবস্থা বজায় ছিল মাসের শেষ কর্মদিবসেও। মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সুচকের গতি বাড়িয়ে দিয়েছিল চীনা প্রতিষ্ঠান ‘আলীবারার” আইপিও। বিনিয়োগকারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন বাজারে। ফলে আলিবাবার প্রতিটি শেয়ারের মুল্য ২৫ ডলার থেকে হয়ে গিয়াছিল ৩৬ ডলার।

এছাড়া একই ধরেরন ঝড় তুলেছিল “ভার্জিন আমেরিকা এয়ারলাইন্স” এর শেয়ার। অর্ন্তভূক্তির প্রথম দিনেই প্রতিটি শেয়ারের দাম ২৩ ডলার থেকে বেড়ে ৩০ ডলারে উন্নিত হয়েছিল। সব মিলিয়ে ভালো একটি মাস পার করল আমেরিকার শেয়ার বাজার।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/তরিকুল/এআর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *