সম্প্রতি সরকার ঘোষিত মজুরি কাঠামো বৈষম্যের অভিযোগ তুলে রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, কারখানা ভাঙচুর, পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এসকল ঘটনায় অন্তত ২০ শ্রমিক আহত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে বিশমাইল-জিরাবো সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে শিল্পাঞ্চলের কাঠগড়া, জিরাবো, জিরানি ও ধনাইদ এলাকার অন্তত ১৭টি তৈরি পোশাক কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এই তালিকায় রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমেটেড।
পুলিশ জানায়, আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় অবস্থিত এয়ার জিন্স নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় পূর্ব ঘোষিত বেতন পরিশোধের নির্ধারিত দিনে বেতন বৈষম্যের অভিযোগ এনে শ্রমিকরা দুপুরের দিকে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে কারখানাটির শ্রমিকরা রাস্তায় বেরিয়ে এসে তাদের সাথে একত্বতা প্রকাশ করার জন্য আশেপাশের কারখানাগুলোতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় আশপাশের এফজিএস ডেনিম, টেক্সটাউন গ্রুপ, এভার ব্রাইট স্যোয়েটার, পেনটা ফুট অ্যাপারেলস, সাউদার্ন গার্মেন্ট, কন্টিনেন্টাল গার্মেন্ট, অ্যালায়েন্স ফ্যাশন, ফেব্রিক্স নিট, অ্যাকটিভ নিট, গ্রিন লাইফ নিট, আজমত গ্রুপ, গ্লেয়ার ফ্যাশন, জেনারেশন নেক্সট, জিম্যাক্স ও মাহুমদ ফ্যাশনসহ অন্তত ১৭টি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা নিজ নিজ কাজ ফেলে সড়কে নেমে আসে। পরে তারা বিভিন্ন কারখানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ধাওয়া দিলে শ্রমিকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে প্রায় ২০ শ্রমিক আহত হলেও তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কাঠগড়া ও জিরাবো এলাকার প্রায় দশটি কারখানায় সোমবারের জন্য ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
এব্যাপারে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান জানান, নতুন বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের গুঁজব রটিয়ে সোমবার বিশমাইল-জিরাবো সড়কে বিক্ষোভ করেছে আশপাশের অন্তত ১৭টি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৮ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যার যার বাসায় ফিরে যায়।
তিনি আরো জানান, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিল্প পুলিশ কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি আব্দুস সালাম ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে বৈঠক করেছন। এসময় নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে যাতে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সে জন্য শ্রমিক নেতারা বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া জানুয়ারি মাসের বেতন প্রদানের পরই শ্রমিকরা নতুন বেতন কাঠামোর সুবিধা পাবেন বলেও জানানো হয়।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/জেড/বি