আস্থা সংকটেও ভালো ব্যবসা তালিকাভুক্ত জীবন বীমার

lifeনিজস্ব প্রতিবেদক :

বিভিন্ন কারণে গ্রাহক আস্থা সংকট নিয়েও ভালো ব্যবসা করছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১১টি জীবন বীমা কোম্পানি। এখন পর্যন্ত অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আটটি কোম্পানি। এদের মধ্যে তহবিল বেড়েছে পাঁচটির এবং কমেছে তিনটির। বাকি তিনটি কোম্পানি এখনো অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

কোম্পানিগুলোর অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এ চিত্র উঠে আসে। সূত্র থেকে জানা যায়, অর্ধবার্ষিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তহবিল ২ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ১৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ১৪ কোটি ৭৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৯১১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তহবিল ৭ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৪৫ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার টাকা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ২ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯২ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

অর্ধবার্ষিকে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তহবিলেও রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এর তহবিল ২৭ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ১৪৮ কোটি ৯২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ৭৩ কোটি ৮৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ১১৩ কোটি টাকা।

অন্য বিমা গুলোর দাবি, এখন পর্যন্ত আইডিআরএ জীবন বীমা কোম্পানির বিনিয়োগ নীতিমালা তৈরি করতে পারেনি। ফলে পুরনো আইনে ব্যবসা করতে হচ্ছে। জীবন বীমা তহবিলের একটি বিরাট অংশ ব্যাংকে অলস পড়ে থাকছে। যদি এটা যথাযথভাবে বিনিয়োগ করা যেত, তাহলে এ খাতে তহবিলের পরিমাণ আরো বাড়ত।

অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের জীবন বীমা তহবিল ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ৮ কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০৬ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের তহবিল ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪৬ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ৪ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪৪ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে তহবিল কমে যাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

জানা যায়, অর্ধবার্ষিকে সন্ধানী ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তহবিল ৩৫ কোটি ৪৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা কমে দাঁড়ায় ৮৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ৩ কোটি ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা কমে দাঁড়ায় ৮১৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। একই সময়ে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তহবিল ১০ কোটি ৩০ লাখ ৭০ হাজার কমে দাঁড়ায় ৭১৯ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তহবিল ৫৪ কোটি ৪ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৬৬ কোটি ৫৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

জানা যায়, যেসব কোম্পানি এখনো অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি, তাদের মধ্যে রয়েছে মেঘনা লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ ও রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

এ বিষয়ে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল মোহাম্মদ আবু নাসের বলেন, সম্প্রতি নানা ঘটনায় বীমা খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে গেছে। এমনটি না ঘটলে তহবিল আরো বাড়ত বলে আমার ধারণা।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *