দেশের অন্যতম শীর্ষ মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের বাজারে আনা কোম্পানিগুলো শেয়ার দরে পিছিয়ে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বাজারে কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৮০ শতাংশই ইস্যু দরের নিচে নেমে এসেছে।
গত ৬ বছরে (২০১১ সাল থেকে বর্তমান) ৫টি কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে এনেছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারবাজারে আনা কোম্পানিগুলো হলো – জিবিবি পাওয়ার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ফার ইষ্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, মতিন স্পিনিং মিলস ও তসরিফা ইন্ডাষ্ট্রিজ।
এ সময়ে ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানটি সবকটি কোম্পানিকে প্রিমিয়ামসহ শেয়ারবাজারে এনেছে। সবচেয়ে বেশি ৪০ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করে জিবিবি পাওয়ার। এই ৫ কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে ৪২৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছে।
ইস্যু দরের থেকে সবচেয়ে বেশি কমে অবস্থান করছে জিবিবি পাওয়ারের শেয়ারের মূল্য। কোম্পানিটির ৬৪.৫ শতাংশ দর কমেছে। ২০১২ সালে কোম্পানি বাজার থেকে ৪০ টাকার দরে শেয়ার ছাড়ে। মোট ৮২ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলেছিল কোম্পানিটি। বর্তমানে কোম্পানিটির দর দাঁড়িয়েছে ১৪.২০ টাকা। এছাড়া প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৩৯.৬৪ শতাংশ, তসরিফা ইন্ডাস্টিজের ২৩.০৮ শতাংশ ও ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং এর ২.৫৯ শতাংশ দর কমেছে। আর একমাত্র মতিন স্পিনিং মিলসের শেয়ার দর ইস্যু মূল্যের উপরে রয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ইস্যু মূল্যের চেয়ে ৯.১৯ শতাংশ বেশিতে অবস্থান করছে।
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ২০১৩ সালে কোম্পানিটির তালিকাভুক্তির সময়ে বাজার থেকে ৮৪ কোটি টাকা উত্তোলন করেছিল। ২৮ টাকায় ইস্যু করা কোম্পানির বর্তমানের দর ১৬.৯০ টাকা। ফারইস্ট নিটিং নামের কোম্পানিটি ২৭ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করে বর্তমানে দর ২৬.৩০ টাকা। মতিন স্পিনিং নামের কোম্পানিটি ২০১৪ সালে ৩৭ টাকা দরে শেয়ার ছেড়েছিল। এখন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর ৪০.৪০ টাকা। তসরিফা ইন্ড্রাস্টিজ ২০১৫ সালে ২৬ টাকা দরে শেয়ার ছাড়ে। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর এখন ২০ টাকা। এদিকে আইপিও পূর্বের তুলনায় আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ইস্যু ব্যবস্থাপনার ৩টি বা ৬০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় কমে এসেছে।
তালিকাভুক্তির পরে সবচেয়ে বেশি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে জিবিবি পাওয়ারের। কোম্পানিটির ৬৫.৭৬ শতাংশ ইপিএস কমেছে। এছাড়া প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৪৮.৯৯ শতাংশ ও ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং এর ৬.৩০ শতাংশ ইপিএস কমেছে। অপরদিকে তসরিফা ইন্ডাস্টিজের ১৪.৭৭ শতাংশ ও মতিন স্পিনিং মিলসের ৭.৫৬ শতাংশ ইপিএস।
তালিকাভুক্তির সময়ের চেয়ে কোম্পানিগুলোর শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইপিএস কমেছে জিবিবি পাওয়ারের। ২০১২ সালে তালিকাভুক্তির সময়ে ইপিএস ছিল ২.৫৭ টাকা। ২০১৫ সালে নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুসারে ইপিএস দাঁড়ায় .৮৮ টাকা। ২০১৩ সালে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ইপিএস ছিল ৩.৪৭ টাকা। বর্তমানে ইপিএস ১.৭৭ টাকা। ফারইস্ট নিটিংয়ের ২০১৪ সালে ইপিএস ছিল ২.৫৪ টাকা। বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ২.৩৮ টাকা। তবে মতিন স্পিনিংয়ের ২০১৪ সালে ইপিএস ছিল ৩.৯৭ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.২৭ টাকা।
আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ কোম্পানি নিয়মিতভাবে বোনাস শেয়ার প্রদান করায় শেয়ার দরে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আর একই কারণে ইপিএস কমেছে। তবে জিবিবি পাওয়ার ছাড়া অন্যসব কোম্পানির নীট মুনাফার পরিমাণ বেড়েছে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/বিএ