‘এক ব্যক্তি কোম্পানি’ খুলতে আইন সংশোধনের প্রস্তাব

tipuস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

বিশ্বব্যাংকের ব্যবসায় পরিবেশের সূচকে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে ‘এক ব্যক্তি কোম্পানি’ খোলার সুযোগ রেখে জাতীয় সংসদে কোম্পানি আইন সংসদের প্রস্তাব উঠেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সোমবার সংসদে বিলটি উত্থাপনকালে বিরোধিতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম। তবে কণ্ঠভোটে সেই আপত্তি নাচক হয়ে যায়।

স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে বিল সংসদে উত্থাপন না করার প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

কোম্পানি আইন অনুযায়ী, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি পরিচালিত হয় পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে। এই পর্ষদ বা বোর্ডের পরিচালক ও চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। তবে প্রস্তাবিত আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘এক ব্যক্তির কোম্পানি’ হলো সেই কোম্পানি, যার বোর্ডে সদস্য থাকবেন কেবল একজন।

এই বিধানের বিরোধিতা করেন মোঃ ফখরুল ইমাম। তিনি বিলটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মন্ত্রিসভায় ব্যবসায়ীরা থাকায় এমন আইন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি এক ব্যক্তির সংজ্ঞা হিসেবে ‘একজন প্রাকৃতিক স্বত্বাবিশিষ্ট ব্যক্তি’ স্পষ্ট করার দাবি করেন।

জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বিষয়গুলো সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করা হবে বলে জানান। একইসঙ্গে তিনি নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তুলে ধরে জানান, ব্যবসায়ী মন্ত্রী হিসেবে হয়তো আমার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তবে কারও কাছে তিনি হাত পাতবেন না বলেই ব্যবসা করেন। আমার ৭০ বছর বয়সের মধ্যে ৫৪ বছরই সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে রয়েছেন। ঢাকায় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন পদে থেকে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছি। বিলটি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের কোম্পানি আছে। দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সরকার এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তির কোম্পানির পরিশোধিত শেয়ার মূলধন হবে অন্যূন ৫০ লাখ টাকা এবং অনধিক ১০ কোটি টাকা। অব্যবহিত পূর্ববর্তী অর্থবছরের বার্ষিক টার্নওভার অন্যূন দুই কোটি টাকা এবং ১০০ কোটি টাকা হবে। পরিশোধিত শেয়ার মূলধন এবং বার্ষিক টার্নওভারের বেশি হলে শর্তপূরণ সাপেক্ষে এক ব্যক্তির কোম্পানিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বা ক্ষেত্রমত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা যাবে। এক ব্যক্তির কোম্পানিকে বছরে কমপক্ষে একটি পরিচালক সভা করতে হবে।

বিলে বিধান অনুযায়ী, পরিচালক এবং প্রধান ব্যক্তি একজন থাকবেন বলে এ ধরনের কোম্পানি পর্ষদ সভা করা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নিয়মের ছাড় পাবে। একমাত্র সদস্য মারা গেলে তার মনোনীত ব্যক্তি সব শেয়ারের স্বত্বাধিকারী হবেন। কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে হস্তান্তরকারীর ব্যক্তিগত উপস্থিতি এবং কমিশনের মাধ্যমে দলিলে স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, কোম্পানি উঠে গেলে পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোম্পানি আইন সংশোধন করে অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধনের বিধান রাখা হয়েছে। বর্তমান আইনে ১৪ দিনের নোটিসে বোর্ড মিটিং করার বিধান আছে। এটাকে ২১ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে বিলে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *