চট্টগ্রাম বন্দরে আবারো সমালোচনায় সাইফ পাওয়ার

saifনিজস্ব প্রতিবেদক :

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের (এনসিটি) দুটি বার্থ পরিচালনার দরপত্র মূল্যায়নে শেষ পর্যন্ত যোগ্য বিবেচিত হলো সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। মোট তিনটি দরপত্র জমা পড়লেও আরোপিত শর্ত পূরণের যোগ্যতা ছিল একমাত্র ঐ প্রতিষ্ঠানটিরই। ফলে দরপত্রগুলোর টেকনিক্যাল ও আর্থিক প্রস্তাব যাচাই বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠানটিকে যোগ্য বিবেচনা করেছে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি।

যৌথভাবে দাখিল করা টেন্ডারে যোগ্যতায় সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে মেসার্স এমএইচ চৌধুরী ও মেসার্স এ এ্যান্ড জে ট্রেডার্স। বন্দর কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করছে বলে জানা গেছে। এদিকে, টেন্ডারের শর্তে শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করায় এনসিটিতে অপারেটর নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য বার্থ অপারেটরদের অভিযোগ পছন্দের প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে পাশ কাটাতে এনসিটির চারটি বার্থে অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়াটি একসঙ্গে সম্পন্ন না করে আলাদা আলাদাভাবে দরপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এনসিটির দুটি বার্থে অপারেটর নিয়োগ সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ টেন্ডারের শর্তের কারণে দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ বঞ্চিত প্রতিষ্ঠানগুলোর।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, এনসিটির ৪ ও ৫ নম্বর বার্থের জন্য যৌথ টেন্ডারে সাইফ পাওয়ার টেক, এমএইচ চৌধুরী এবং এ এ্যান্ড জে ট্রেডার্স দর প্রদান করেছে ৪৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। টেকনিক্যাল অফার যাচাই বাছাইয়েও উত্তীর্ণ হয়েছে এই যৌথ দরপত্রটি।

অপারেটর নিয়োগের জন্য যোগ্যতার শর্তে টার্মিনাল অপারেশনের অভিজ্ঞতা চাওয়ায় অন্য বার্থ অপারেটরগুলোর যোগ্য বিবেচিত হওয়ার সুযোগ নেই। তবে যৌথ টেন্ডারে অপর দুই প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএইচ চৌধুরী ও মেসার্স এ এ্যান্ড জে ট্রেডার্স বিবেচিত হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে।

সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড টার্মিনাল অপারেটর হলেও আওয়ামী লীগের এ দুই নেতার প্রতিষ্ঠানের টার্মিনাল অপারেশনের অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বার্থ অপারেটর হয়েও এই দুই প্রতিষ্ঠান কিভাবে বিবেচিত হয় তা নিয়েও রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। একাধিক বার্থ অপারেটর ক্ষোভের সঙ্গে জানান, পুরো প্রক্রিয়াটিই অস্বচ্ছ। যৌথভাবে এই টেন্ডারে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বলেও অভিমত তাদের।

বন্দর ও বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আলোচিত সাইফ পাওয়ারটেককে এনসিটি অপারেশনের দায়িত্ব প্রদানের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াটি ছিল স্রেফ আইওয়াশ। বাকি ছিল শুধুমাত্র লোক দেখানো একটি প্রক্রিয়ার। এনসিটির চারটি বার্থের জন্য দু’দফায় আলাদাভাবে দরপত্র গ্রহণের কৌশলটিও মূলত সে কারণে। কারণ একসঙ্গে চারটি বার্থের জন্য দরপত্র গ্রহণ করা হলে তা যেত একেবারে প্রধানমন্ত্রী পর্যায় পর্যন্ত। পৃথকভাবে দরপত্র জমা নিয়ে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে পাশ কাটানোর চেষ্টাই করা হয়েছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *