চাল নিয়ে চালবাজি : বাজারের চিত্র

riceনিজস্ব প্রতিবেদক :

যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বাজারে টানা তিন দিন চালের দাম বেড়েছে। এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের ক্রেতারা আরেক দফা বিপাকে পড়েছেন। গতকালও বিভিন্ন ধরনের চাল আগের দিনের চেয়ে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। তিন দিনে কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা। দাম বাড়তে বাড়তে মোটা চাল এখন ৫২ থেকে ৫৪ টাকা হয়েছে। মাঝারি মানের চালের দাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা ও সরু চালের দাম ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় পৌছেছে।

সরকার বলছে, পাইকারি বা খুচরা বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। ব্যবসায়ীদের একটি চক্র পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বেপরোয়াভাবে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ঈদের পর থেকে ধাপে ধাপে বৃদ্ধির কারণে এ অবস্থায় গিয়ে ঠেকেছে।

চালের চড়া দামে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। গত সোমবার মিরপুর ১নং বাজার থেকে ৪৩ টাকা কেজিতে মোটা চাল কিনেছেন রিকশাচালক জয়নাল আবেদীন। গত মঙ্গলবার একই চাল কিনেছেন ৪৮ টাকায়। গতকাল বৃহস্পতিবার চাল কিনতে এসে কেজি ৫২ টাকা শুনে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি।

তার মতো কম আয়ের মানুষদের দু’একদিন পর পর চাল কিনতে হয়। এভাবে প্রতিদিন দাম বাড়লে বিপাকে পড়তে হবে।

চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সরকার। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দেশজুড়ে চালের অবৈধ মজুদ তল্লাশি চালানো হবে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ১৫ টাকা কেজিতে চাল খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) আগামী রোববার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল খুচরায় প্রতিকেজি মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত সোমবার ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা বলেন, তাদের প্রতি বস্তা মোটা চাল পাইকারি বাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় আনতে হয়েছে। এ হিসেবে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৫০ টাকা। এর সঙ্গে এক টাকা খরচ রয়েছে। একইভাবে বেড়ে মাঝারি মানের বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। সরু চাল মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।

আগে কম দামে কেনা চালও এখন বাড়তি দরে বিক্রি করছেন দোকানিরা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন সমকালকে বলেন, বাজারে দর বাড়লে আগে কেনা থাকলেও সবাই নতুন করে দর বাড়িয়ে দেন। তবে কয়েকদিন ধরে টানা দর বৃদ্ধিতে এখন বেশি দাম দিয়ে চাল আনতে হচ্ছে। বাংলাদেশে অটো মেজর হাসকিং রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, অনেক মিল ধান কিনছে। অনেক মিল কিনতে পারেনি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। ফলে এবার অর্ধেক ধানও মিলে যায়নি। অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় আমদানি কম। ব্যবসায়ীরা যে যার মতো ব্যবসা করছেন।

তিনি বলেন, আমদানিকারকদের সরকার শুল্ক ছাড় দিলেও তারা কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে বাজারে সব চালের দর বেড়েছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *