ব্যাংকিং খাতের ওপর কড়া নজর রাখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারই অংশ হিসেবে দুর্নীতির অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ শীর্ষস্থানীয় ১৬ ব্যাংকারকে তলব করা হয়েছে। আত্মসাৎকৃত অর্থ উদ্ধার ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের আইনের কাছে সোপর্দ করতে অনুসন্ধান ও তদন্তের কাজ করছেন কমিশনের একদল দক্ষ, চৌকস কর্মকর্তা।
দুদকের এক পরিচালক বলেন, জনগণের অর্জিত অর্থ আমানত হিসেবে ব্যাংকে রাখা হয়। সেই ব্যাংকের ভেতরের ও বাইরের সংগঠিত দুর্নীতিবাজ একটি চক্র যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতির মাধ্যমে সে অর্থ নিজেদের ইচ্ছামতো লুটেপুটে নিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। দেশের অর্থনীতির রক্ত সঞ্চালনের সংবেদনশীল এ খাতকে রক্ষা করতে দুদকের যা যা করণীয় আছে তা করা হবে।
দুদক সূত্র জানায়, বেসিক, এবি, এনআরবিসি, ফারমার্স ব্যাংকে সংঘটিত দুর্নীতি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। সংশ্নিষ্টদের দুর্নীতির যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানার জন্য এরই মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের ১৬ ব্যাংকারকে তলব করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত তাদের পর্যায়ক্রমে ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর মধ্যে আগামী ৮ মার্চ তৃতীয়বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলোচিত শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে। এর আগে তাকে দু’বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৫৬ মামলায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম ৪৯ নম্বর মামলায় তাকে তলব করেছেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে ঋণের নামে ৪৯ কোটি ৯৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
এবি ব্যাংক বিদেশে ব্যবসার নামে পাচার করে এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা (২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলা তদন্ত পর্যায়ে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হকসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান।
এর মধ্যে আগামী ১১ মার্চ ডাকা হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক এমডি মো. ফজলুর রহমান, শামীম আহমেদ চৌধুরী ও ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড ট্রেজারি শাখার প্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামালকে। আগামী ১৩ মার্চ ডাকা হয়েছে ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুল আজিম, হেড অব করপোরেট মোহাম্মদ মাহফুজ উল ইসলাম ও হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমানকে। তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হবে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এসটি