নিজস্ব অর্থায়নে হলেও চালু হওয়ার পর পদ্মা সেতু পার হতে মোটা অঙ্কের টোল (গাড়িভেদে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা) দিতে হবে। বর্তমানে পদ্মা নদী ফেরিতে (শিমুলিয়া–কাওড়াকান্দি) পাড়ি দিতে যে টাকা লাগে, সেতু পার হতে এর চেয়ে গড়ে দেড় গুণ বেশি টাকা খরচ করতে হবে। আর বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলের সঙ্গে তুলনা করলে তা হবে দ্বিগুণেরও বেশি।
ফেরিতে করে একটি বড় বাস পদ্মা নদী পার হতে লাগে ১ হাজার ৫৮০ টাকা। পদ্মা সেতু হলে টোল দিতে হবে ২ হাজার ৩৭০ টাকা। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার জন্য বড় বাসের টোল ৯০০ টাকা।
পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। বঙ্গবন্ধু সেতুতে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার সময় টোলের হার ছিল বেশ কম। ২০১১ সালে তা বাড়ানো হয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিদেশি অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করা হলে কত টাকা টোল ধার্য করা উচিত, সে বিষয়ে দাতাদের শর্ত বা পরামর্শ থাকে। কিন্তু দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত সেতুর ক্ষেত্রে এ রকম কোনো নীতিমালা নেই। সাধারণত সেতু হওয়ার আগে ফেরিতে যে হারে টোল নেওয়া হয়, সেতুতেও সেই হারে টোল নির্ধারণ করে থাকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)।
এ বিষয়ে সেতু বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিদ্যমান ফেরির চেয়ে সেতু হলে দেড় গুণ টোল ধরা স্বাভাবিক নিয়ম (স্টান্ডার্ড প্র্যাকটিস)। এরপরও যদি সরকার মনে করে বেশি হচ্ছে, তাহলে কমাতে পারে।
এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজ এগিয়েছে ৮৩ শতাংশ। ২০২১ সালের জুনে সেতু চালু করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
পদ্মা সেতু চালুর পর ১৫ বছরের জন্য একটি টোল হারের তালিকা করেছে সেতু বিভাগ। তালিকা অনুসারে, ছোট ট্রাকের জন্য ১ হাজার ৬২০ টাকা টোল প্রস্তাব করা হয়েছে। মাঝারি ট্রাকের টোল ২ হাজার ১০০ টাকা। বড় ট্রাকের ২ হাজার ৭৭৫ টাকা। চার এক্সেলের ট্রেইলারের টোল হবে ৪ হাজার টাকা। ট্রেইলারের ক্ষেত্রে চার এক্সেলের পর প্রতি এক্সেলে দেড় হাজার টাকা টোল যোগ হবে। প্রতি ১৫ বছর পরপর টোলের হার ১০ শতাংশ করে বাড়ানো হবে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/