পর্ষদ নিয়ে মিথ্যা তথ্যে ভরপুর সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল

cnaনিজস্ব প্রতিবেদক :

ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা দুটি পর্ষদ নিয়েই অনেক মিথ্যা তথ্য দিয়ে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল। গতকাল রবিবার থেকে কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর টাকা সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

আইপিওর চাঁদা সংগ্রহের জন্য কোম্পানিটি যে বিবরণীপত্র বা প্রসপেক্টাস প্রকাশ করেছে, তাতে পরিচালকদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও অপর এক পরিচালক সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু অসংগতিও রয়েছে।

এ ছাড়া কোম্পানিটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এর পরও কোম্পানিটিকে টাকা তোলার অনুমোদন দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কোম্পানি আইনের ১০৪ ধারা অনুযায়ী, কোনো কোম্পানির পরিচালক বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) অনুমোদন ছাড়া ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত লাভজনক কোনো পদে থাকতে পারবেন না। কিন্তু সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন এটির পরিচালকেরা। আইপিও প্রসপেক্টাস অনুযায়ী, কোম্পানিটির পাঁচ পরিচালকের মধ্যে তিনজনই ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

কোম্পানির এমডির পদে রয়েছেন রুকসানা মোরশেদ, পরিচালক জামালউদ্দিন পাটোয়ারি নিজে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা বা সিএফও এবং ইফতেখার আবদুল হাই রয়েছেন আইটি বিভাগের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে। আর কোম্পানি সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন ফারহানা জামান লিয়েনা নামের একজন শেয়ারধারী।

আইপিও বিবরণীপত্রে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রুকসানা মোরশেদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত যেগুলো তালিকাভুক্ত নয়। কিন্তু তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফ্যামিলিটেক্সের পরিচালক পদে তাঁর থাকার তথ্যটি গোপন করা হয়েছে বিবরণীপত্রে।

কোম্পানিটির শেয়ারের ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা মার্চেন্ট ব্যাংক এএফসি ক্যাপিটালের পক্ষ থেকে এক কর্মকর্তা জানান, কয়েক মাস আগেই তিনি ফ্যামিলিটেক্সের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে গতকাল বিকেলে ফ্যামিলিটেক্সের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পরিচালক হিসেবে রুকসানা মোরশেদের নাম রয়েছে।

এ ছাড়া বিবরণীপত্রে (৪৪ পৃষ্ঠা) বলা হয়েছে এমডি, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও), কোম্পানি সচিব, ফিন্যান্স ডিরেক্টর ও মহাব্যবস্থাপক (ফিন্যান্স) ছাড়া কোম্পানির বেতনভোগীদের মধ্যে আর কেউ শেয়ারধারী পরিচালক নেই। অথচ আইটি শাখার ব্যবস্থাপক ইখতেখার আবদুল হাইও কোম্পানির পরিচালক।

আবার বিবরণীতে কোম্পানির অর্থ (ফিন্যান্স) পরিচালকের দায়িত্বে থাকা মৃদুল কুমার সেন গুপ্তের এই পদে যোগদানের তারিখ দেখানো হয়েছে ১৯৮৯ সালের ১ মার্চ। অথচ কোম্পানিটির জন্ম ২০০১ সালে।

কোম্পানির সিএফও জামালউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘বিবরণীপত্রে কিছু অনিচ্ছাকৃত ও মুদ্রণজনিত ভুল রয়েছে। তবে আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধাণ্য দিই।’

এসব তথ্যের সঠিকতা যাচাইয়ের প্রধান দায়িত্ব ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থার। এ ক্ষেত্রে তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে অনিয়ম বা আইন লঙ্ঘন পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্টমার্কেটবিডি.কম/এইচ/সি

 

 

 

সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের অনিয়মের আরো খবর আসছে………….

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *