প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া শেয়ারবাজারের উত্থান হবে না : ফিরোজ রশিদ

Firoj-SM12016061214445120200115200343স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

শেয়ার বাজার উত্থানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিনিয়োগকারীদের রাস্তায় বসে থাকার খবরের সূত্র ধরে তিনি এ দাবি জানান।

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, বিনিয়োগকারীরা আজ রাস্তায় বসে গেছে। ৩০ বছর ধরে দেখছি তাদের পায়ে জুতা নেই। তারা বলে আমাদের কী অবস্থা হলো? দেখার কি কেউ নেই?

তিনি বলেন, সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ কমিশন জগদ্দল পাথরের মতো বসে আছে। তালিকাভুক্তি ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই। সব দোষ দেওয়া হয় মেম্বারদের ঘাড়ে। তারা যে পচা কোম্পানিগুলো এনে এনে আমাদের প্রতিদিন নিঃস্ব করে দিচ্ছে তার জন্য কোনো কমিশন গঠন করা হচ্ছে না। আজ পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই। ১০ টাকার শেয়ার ৩০ টাকায় বাজারে আনার জন্য ইস্যু ম্যানেজারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে না। প্রশান্ত কুমার হাওলাদার ৩৫শ’ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন।

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, এসব বিষয়ে আমি অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। নিশ্চয়ই একথা প্রধানমন্ত্রীর কানেও যাবে। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করলে আমাদের শেয়ার বাজারে ফিরে আসতে পারে। না হলে শেয়ার বাজারের উত্থানের কোনো উপায় দেখি না।

তিনি বলেন, দুর্বল কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তি বন্ধ করতে হবে। শেয়ার বাজারের এ অবস্থার একমাত্র কারণ দুর্বল কোম্পানি। যাদের কোনো ভিত নেই, তাদের শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কিছু দুর্বল কোম্পানি, পচা ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের রাস্তায় নামিয়েছে। এজন্য আমি বলেছিলাম একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেন। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। আজ পর্যন্ত কোনো কমিশন গঠন করা হয়নি। একজন মানুষকেও শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। দুদক এখানে নিশ্চুপ। বাজার থেকে মূলধন ৯৫ হাজার কোটি টাকা নেই। আমি ৪০ বছর ধরে শেয়ার বাজারে আছি।

‘মজার বিষয় হলো বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটি একচেঞ্জ কমিশন যারা আমাদের দেখাশোনা করবেন, তারাই পচা কোম্পানিগুলো ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব কোম্পানি ১০ টাকার শেয়ারের প্রিমিয়াম দেয় ৩০-৪০ টাকা। পরবর্তীকালে দেখা যায়, এসব কোম্পানির শেয়ার ৭,৮, ১০ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ মূল দামের নিচে চলে আসছে। এভাবে বিনিয়োগকারী শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের টাকা দিলো ৩ কোটি ৭২ লাখ। ২৫ শতাংশ শেয়ার নিয়ে গেলো প্রতি শেয়ারের ২১ টাকা দাম ধরে। অথচ ১০০ টাকা আমরা দাম ঠিক করেছিলাম। আমাদের বাধ্য করা হলো বিক্রি করতে। পৃথিবীর কোনো দেশে নাই মিচ্যুয়ালাইজেশন করার পরে বাধ্য করবেন এ টাকায় তোমার শেয়ার বিক্রি করতেই হবে। ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা দিয়ে বলা হলো এখান থেকে টাকা নিলে ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে। ৫০ লাখ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে। অথবা তিন বছরের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে।’

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, এক সপ্তাহ যাবত শেয়ার বাজারের জন্য মানুষ রাস্তায় শুয়ে পড়েছে। তারা কান্নায় বিপর্যস্ত। লাখ লাখ পরিবার সর্ম্পূণ ধুলায় মিশে যাচ্ছে। তারপরও এ ব্যাপারে সরকার কোনো পদক্ষেপ বা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে দৃশ্যমান হয়নি। সংসদে তিনদিনেও আশ্বস্ত হতে পারছি না। এ অবস্থা থেকে বিনিয়োগকারীদের বাঁচানোর জন্য কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান তিনি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/আর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *