দেশের সম্ভাবনাময় আবাসন খাত বহুমুখী সংকটে স্থবির হয়ে পড়ছে। মানুষের বাসস্থানের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে এ খাত বড় অবদান রাখছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এ খাতে চরম সংকট চললেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা মেলেনি। ফলে ধীরে ধীরে মুখ থুবড়ে পড়ছে আবাসন খাত।
সর্বশেষ তথ্য মতে, সারা দেশে আবাসন খাতে বিক্রি হ্রাস পেয়েছে ৮০ শতাংশ। আর নতুন প্রকল্প গ্রহণের হার কমেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। বিদ্যমান অবস্থা থেকে এ খাতের উত্তোরণের জন্য সরকারের বিশেষ সহযোগিতা দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আবাসন খাত স্বাভাবিক হতে পারবে না। আর সেটা না হলে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে। উন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশ গঠনের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে এ খাত।
আবাসন ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি ১৪-১৬ শতাংশ, যা সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অন্যান্য দেশে রেজিস্ট্রেশন ফি ৪-৭ শতাংশের মধ্যে। একজন গ্রাহক একটি ফ্ল্যাট কিনলে অনেক টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হচ্ছে। এ কারণে গ্রাহকদের এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ কমছে। আর একটি ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশনের কিছুদিন পর বিক্রি করে দিলে নতুন করে একই হারে ফি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।
একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নামমাত্র ফি ধার্য করলে এ খাতে সেকেন্ডারি একটি মার্কেট সৃষ্টি হবে। যেটা আবাসন ব্যবসায় ইতিবাচক ধারা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু সরকার সেই সুযোগ দিচ্ছে না। এ ছাড়া বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ, স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ও সরকারের বিশেষ ঋণ তহবিল না থাকায় আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।
এ প্রসঙ্গে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, আবাসন শিল্পে অন্যান্য দেশের মতো শিল্পঋণ সুবিধা চালু, রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ৪ শতাংশে কমিয়ে আনা এবং সেকেন্ডারি মার্কেটে রেজিস্ট্রেশন ফি আরও কমাতে হবে।
তিনি আরো জানান, আবাসন খাতের মন্দাবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্প ও মধ্যবিত্ত আয়ের ক্রেতাসাধারণের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ তহবিল গঠন এবং সিঙ্গেল ডিজিটে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা চালু করতে হবে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/