বাংলাদেশের বাজারের ‘উপযোগী’ ওষুধ আনতে না পেরে লোকসানের কারণে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন তাদের কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে জানালেন কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
শুক্রবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম আজিজুল হক বলেন, ঘাটতি কীভাবে পুষিয়ে আনা যায়, সেই চিন্তা ছিল তাদের মাথায়। কিন্তু তারা তা পারেননি।
১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে কারখানা চালিয়ে আসা এ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বৃহস্পতিবার এক বৈঠকের পর তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জানায়।
তবে জিএসকের কনজিউমার হেলথকেয়ার ইউনিট বাংলাদেশে হরলিকস, মালটোভা, গ্ল্যাক্সোজ-ডি, সেনসোডাইনের মত পণ্য বিক্রি চালিয়ে যাবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জিএসকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিট বন্ধ হওয়ার কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়া এক হাজারের বেশি কর্মীকে তারা যথাযথ প্রাপ্য পরিশোধ করবে এবং ইউনিসেফের মাধ্যমে সরকার গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের যে ভ্যাকসিন কিনত, তাও বাংলাদেশে পাওয়া যাবে।
কিন্তু গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন তাদের ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটের ব্যবসায় টিকতে না পারার যে কারণ দেখিয়েছে তা বিস্ময়ের সৃষ্টি করে।
এর ব্যাখ্যায় চেয়ারম্যান এম আজিজুল হক বলেন, “আমরা ব্যবসা করি আন্তর্জাতিকভাবে। আমাদের বিজনেস মডেল হল- গবেষণার মাধ্যমে একটা ইউনিক প্রডাক্ট তৈরি করা হবে, যা বাজারের চাহিদা মেটাতে পারবে। এরপর ওই প্রডাক্ট আমরা সারা বিশ্বে বিপণন করব।
“কিন্তু বাংলাদেশে আমাদের ওষুধগুলো অনেক দিনের পুরনো, আর অনেক সস্তা। আমরা ব্যবসার ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে পারছিলাম না। সেই ঘাটতি পোষানোর মত নতুন কোনো ওষুধও আমাদের পাইপলাইনে ছিল না।”
এর উদাহরণ দিতে গিয়ে আজিজুল হক বলেন, জিএসকে যখন তাদের নতুন শিংগলস (কোঁচদাদ) ভ্যাকসিন চালু করে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তা দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু ওই ভ্যাকসিন বাংলাদেশের বাজারে ছাড়া হয়নি কারণ বাংলাদেশের বাজারের জন্য সেটা উপযুক্ত নয়।
“আমরা নতুন কোনো ওষুধ আনতে পারিনি, যা বাংলাদেশের বাজারের জন্য উপযুক্ত।… ঘাটতিটা আমরা আর পূরণ করতে পারিনি।”
গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন তাদের কারখানা বন্ধ বা বিক্রি করে দিতে পারে বলে গত কয়েক দিন ধরেই বাজারে গুঞ্জন ছিল। কারখানা বন্ধের ‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ অভিযোগ করে কোম্পানির কর্মীরা দুদিন আগে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনও করেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/বি/জেড