‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে বিকৃতিতে হাইকোর্টে তলব

courtস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে বইটির সম্পাদনা পরিষদের প্রধান ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহাকে আগামী ১২ মার্চ তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই দিন আদালতে হাজির হয়ে বইটিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি কেন খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং কেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি সংযোজন করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, বইটির কোনও সংখ্যা বাজারে থাকলে তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার।

এর আগে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে বিকৃতির অভিযোগের বিরুদ্ধে এক রিটের শুনানি নিয়ে গত ২ অক্টোবর অভিযোগ তদন্ত করে অর্থ সচিবকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই বইয়ে ইতিহাস বিকৃতি করাকে কেন আইনত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, নির্বাহী ব্যবস্থাপক এবং প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের আবুল কালাম আজাদকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এরপর ওই নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট সামষ্টিক অর্থনীতি) ড. মো. জাফর উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘বইটি প্রণয়নে ব্যবহৃত সংশ্লিষ্ট নথিপত্র, তথ্য-উপাত্ত ও সংযোজিত ছবি ইত্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সম্পাদনা কমিটির কাজের মধ্যে অসংগতি ছিল। এ কমিটির কাজে ধারাবাহিকতা ছিল না। নিয়মিত সভাও হতো না। এ ছাড়া, গবেষণা কমিটি ও সম্পাদনা কমিটির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল মর্মে প্রতীয়মান হয়।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতির আদেশমূলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এই বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যাবশ্যক ছিল। জাতির জনকের ঘোষিত স্বাধীনতায় সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বইটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ ব্যাংক-এর ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। বিধায় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট অথবা বঙ্গবন্ধুর অন্য যেকোনও ছবি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা যেতো। কাজেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বইয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে না পাওয়ার যে যুক্তি উত্থাপন করা হয়েছে তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম/জেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *