বাজেটে শেয়ারবাজার সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে কিছুই উপস্থাপন হয়নি : সিএসই

cseস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

বাজেটে চলমান অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়ন এবং গুনগত সম্প্রসারণের লক্ষে কোনো কিছুই উপস্থাপিত হয়নি।

রবিবার (১০ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পক্ষ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলেনে এ কথা বলা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সিএসইর এমডি সাইফুর রহমান মজুমদার।

সিএসইর এমডি বলেন, শেয়ারবাজারের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এবং যথাযথ সম্প্রসারণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী পুঁজি সংগ্রহের জন্য একটি সঠিক কৌশল নির্ধারণ করা অতীব জরুরি। যা শুধুমাত্র শেয়ারবাজারের উন্নয়নই ত্বরান্বিত করবে না, আর্থিক খাতেও একটি টেকসই স্থিতিশীলতা আনয়ন করবে।

সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে লক্ষাধিক লিমিটেড কোম্পানি আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত রয়েছে। এসব কোম্পানির মধ্যে কয়েক হাজার কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে শেয়ারবাজারে যে পরিমাণ কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে তা একান্তই নগন্য।

শেয়ারবাজারের সময়োপযুগী সম্প্রসারণের প্রয়োজনে বাজেটে কয়েকটি কৌশল ও নির্দেশনা বিবেচনার কথা উল্লেখ করেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। এ গুরো হচ্ছে..

১.সরকারি কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করণের জন্য সুস্পষ্ট তাগিদ এবং নির্দেশনা।

২.বহুজাতিক কোম্পানিসমূহকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি নিশ্চিত করণের জন্য আহনী সংস্কার।

৩.বন্ড মার্কেটসহ শেয়ারবাজারের এডভ্যান্স প্রডাক্ট চালু করার কাঠামোগত সংস্কার।

৪. প্রাইভেট সেক্টরে বৈদেশিক ঋণ এবং সিন্ডিকেটিং ফাইন্যান্সিং অনুমোদনের সময় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির শর্তারোপ।

৫.শেয়ারবাজার বিকাশের জন্য জাতীয় ভিত্তিক শক্তিশালী সমন্বয় কমিটি গঠন।

৬. ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক কোম্পানিগুলোর জন্য ২.৫% কর্পোরেট কর কমানোর সুবিধা সকল লিস্টেড কোম্পানির জন্য প্রদান করা। ক্রমান্বয়ে লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির কর্পোরেট কর হারের ব্যবধান বর্ধিতকরণের সুস্পস্ট ঘোষণা।

৭. লিস্টেড কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ আয় থেকে দ্বৈত কর রোহিতকরণ।

৮.শেয়ারবাজারে অবকাঠামো টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে মানসম্মত এবং লাভজনক কর্পোরেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি করার জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা, রেগুলেটরি সমন্বয় এবং আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৌশল প্রনয়ন।

৯.শেয়ারবাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগকারীসহ শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য উপোযোগী এবং কার্যকর ব্যবসায়িক মডেল নিশ্চিত করার জন্য মেয়াদি কৌশল হিসাবে লেনদেনের উপর ধার্য করা উৎস কর কমানো এবং নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তি করার জন্য প্রণোদনা ঘোষণা।

১০. ক্যাপিটাল মার্কেট স্পেশাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইসিবির ভুমিকা নিশ্বিত করার জন্য আইসিবিকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা, বিভিন্ন ব্যাংক কতক আইসিবিকে প্রদত্ত ফান্ড ও ক্যাপিটাল মার্কেট সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগের বাইরে আইসিিবর ভূমিকা সীমিতকরণ।

১১. সিএসইর ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন প্রক্রিয়ার সফল বাস্তবায়ন তথা স্টেটেজিক ইনভেস্টর অন্তভূক্তকরণের স্বার্থে এক্সচেঞ্জগুলোকে পরবর্তী তিন বছর ১০০% কর অবকাশ সুবিধা বহাল করা।

১২.ব্যাংক ও আর্থিক খাত শেয়ারবাজারের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৫০% এরও অধিক, ফলে এই খাতের অস্থিরতা শেয়ারবাজারকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। এই খাতের চলমান অস্থিরতা নিরশন এবং দুর্বলতা চিহ্নিত করে যথাযথ কৌশল প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন।

এ ছাড়া, গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। বাজেটে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ, জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র দূরীকরণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে সয়ম্ভরতা অর্জন, দেশীয় শিল্পের বিকাল তথা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য যে সকল কৌশল নির্ধারণ করেছেন তার জন্য চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *