বিএসইসির নতুন নির্দেশনা : আয়-ব্যয়ের হ্রাস-বৃদ্ধির ব্যাখ্যা দিতে হবে

bsecনিজস্ব প্রতিবেদক :

অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। এখন থেকে এসব প্রতিবেদনে কোনো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়, মুনাফা ও অন্যান্য উপাত্তে পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিক হ্রাস-বৃদ্ধি হলে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিএসইসির এক নোটিফিকেশনে সম্প্রতি এ বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে।

কমিশন চেয়ারম্যান ড. এম. খায়রুল হোসেন স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের ওপর জোর দেয়ার পাশাপাশি বাজারের স্থিতিশীলতার ওপর মূল্যসংবেদনশীল তথ্যের প্রভাব নিয়ন্ত্রণেরও চেষ্টা করা হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বরের ওই নোটিফিকেশনে বিএসইসি মোট চারটি নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি ২০০৯ ও ২০১০ সালের এ-সংক্রান্ত দুটি নির্দেশনা বাতিল করেছে।

প্রথমত, তালিকাভুক্ত কোনো সিকিউরিটিজের ইস্যুয়ার শেয়ারবাজারে লেনদেন চলার সময়ে এমন কোনো পর্ষদ সভা করতে পারবে না, যেখান থেকে মূল্যসংবেদনশীল তথ্য আসতে পারে। এ ধরনের পর্ষদ সভাগুলো স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বন্ধের পর কিংবা ছুটির দিনে আয়োজন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, জীবন বীমা কোম্পানি ছাড়া অন্য সব সিকিউরিটিজের ইস্যুয়ারকে প্রথম প্রান্তিক শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে, তা নিরীক্ষিতই হোক আর অনিরীক্ষিতই হোক। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকের ক্ষেত্রে তারা সর্বোচ্চ এক মাস সময় পাবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসির কাছে এ প্রতিবেদন দাখিলের পাশাপাশি কমপক্ষে দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকে (একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি) তা প্রকাশ করতে হবে। এদিকে জীবন বীমা কোম্পানিগুলো প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদনের জন্য ৯০ দিন এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকের জন্য এক মাস সময় দেয়া হয়েছে। তাদেরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একই পদ্ধতিতে প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।

শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস), শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস), শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহসহ (এনওসিএফপিএস) অন্যান্য উপাত্ত প্রকাশের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সময়ের সঙ্গে তুলনামূলক তথ্য উপস্থাপন করতে হবে।

তৃতীয়ত, আর্থিক প্রতিবেদনের কোনো উপাদানে পূর্ববর্তী সময়ের সঙ্গে অস্বাভাবিক ব্যবধান থাকলে এর কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে ইস্যুয়ারকে।

চতুর্থত, ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড বা অন্যান্য সিকিউরিটিজের প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ বাধ্যতামূলক। এছাড়া সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের নিচের দিকে ওয়েব সাইটে আর্থিক প্রতিবেদনের লিংক মোটা অক্ষরে উল্লেখ করতে হবে।

নোটিফিকেশনে আরো বলা হয়, বিএসইসির ২০০৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জারি করা নির্দেশনা এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০৮-১৮৩ এবং ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারির এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০৯-১৯৩/০৯ নতুন নির্দেশনাটির দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।

প্রসঙ্গত, পূর্ববর্তী নির্দেশনাগুলোর পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানির প্রান্তিক উপাত্ত প্রকাশের নিয়ম চালু হয়। তবে আয়, ব্যয় বা মুনাফা আগের বছরের একই সময় বা পূর্ববর্তী প্রান্তিকের তুলনায় অস্বাভাবিক হারে কমলে বা বাড়লে এর কোনো ব্যাখ্যা দিতে হতো না ইসু্যুয়ারকে। অনিরীক্ষিত ফলাফলের উত্থান-পতনে শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে প্রভাবিত হলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এ বিষয়ে অন্ধকারেই থাকতেন।

নতুন নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি কোম্পানির কার্যক্রমেও স্বচ্ছতা আসবে বলে মনে করছেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *