ব্যাংক আমানতের পর এবার সঞ্চয়পত্রে লাগাম টানার উদ্যোগ

soncoyনিজস্ব প্রতিবেদক :

ব্যাংক আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে মুনাফা বেশি। তাই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অনেকেই বিনিয়োগ করছে এ খাতে।
ফলে সরকারের সুদব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। তাই ব্যাংক আমানত ও সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ব্যবধান কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়ে আসছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা। তবে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমানোর পক্ষে নয়। বরং নারী, প্রতিবন্ধী ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা আরো আকর্ষণীয় করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে পেনশনার ছাড়া অন্যান্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা কমিয়ে ২৫ লাখ টাকা পুনর্নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) মাধ্যমে এ প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা স্বাক্ষরিত ওই প্রস্তাবের একটি অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও পাঠানো হয়েছে।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের ঊর্ধ্বগতি রোধসহ স্বল্প আয়ের মানুষের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে প্রচলিত বিধি-বিধান সংশোধন করে কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে প্রথমেই বলা হয়, পেনশনার ছাড়া অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের প্রতিটি স্কিমে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা কমিয়ে ২৫ লাখ টাকা করা যেতে পারে। বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, ডাকঘর সঞ্চয়পত্রে একক নামে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ এবং যৌথ নামে সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যায়। আর পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ এবং পরিবার সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যায়।

সঞ্চয় অধিদপ্তর যেসব সঞ্চয় স্কিমে যুগ্ম বিনিয়োগের সুযোগ আছে তা রহিত করে কেবল একক নামে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ারও প্রস্তাব করেছে। তা ছাড়া সঞ্চয়পত্রে সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ও নাবালকের নামে কেনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।

সঞ্চয়পত্রের যেকোনো স্কিমে বিনিয়োগকারীর আয়ের উৎস জানানোর বিধান চালুরও প্রস্তাব দিয়েছে সঞ্চয় অধিদপ্তর। একই সঙ্গে নারী, প্রতিবন্ধী এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পরিবার সঞ্চয়পত্রে অনধিক পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফা আরো বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। বর্তমানে পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তুলনামূলক বেশি ১১.৫২ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১১.২৮ শতাংশ, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১১.০৪ শতাংশ ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১১.৭৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের ২৩ মের পর থেকে এ হার কার্যকর আছে। এর আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ছিল ১৩ শতাংশেরও বেশি। বর্তমানে ব্যাংক আমানতের গড় সুদ ৪.৯৭ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকার সামাজিক সুরক্ষার কথা চিন্তা করে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমাতে রাজি নয়। তবে সঞ্চয়পত্রে প্রকৃত বিনিয়োগ আনার জন্য এ খাতে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা কমিয়ে আনার জন্য আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *