‘ব্যাংক এক্সপোজার প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করলেই ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার’

bb-20180322135428স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারে চলমান সংকট উত্তরণে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো বিশেষ বিবেচনায় অর্থ মন্ত্রণালয় তা মেনে নিয়েছে। অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক যত দ্রুত বাস্তবায়ন করবে তত দ্রুত শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংকের এক্সপোজার নিয়ে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল, সেই প্রজ্ঞাপন স্থগিত করলেই শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক। বৃহস্পতিবার ডিএসই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের চলমান সংকট উত্তরণে আমাদের যে প্রস্তাব ছিল অর্থ মন্ত্রণালয় তা বিশেষ বিবেচনায় মেনে নিয়েছে। সেই সঙ্গে তা বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে।

এখন বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন স্থগিত করলে কালকেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। আর প্রজ্ঞাপন স্থগিত করতে ১০ দিন দেরি করা হলে আমরা ১০ দিন সাফার করবো। তাই প্রজ্ঞাপন স্থগিত করতে যাতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না হয় আমরা তার দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে চলমান সংকট উত্তরণে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকটি দাবি জানানো হচ্ছে। ব্যাংকের এক্সপোজার গণনা নিয়ে এবং আইসিবির এক্সপোজার গণনা নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। এ সমস্যা সমাধানে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দাবি ছিল।

তিনি জানান, গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে আমাদের প্রস্তাবগুলো বিশেষ বিবেচনায় মেনে নেয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে তা বাস্তবায়ন করতে চিঠি দেয়া হয়েছে।

যেসব দাবি অর্থ মন্ত্রণালয় মেনে নিয়েছে, সে বিষয়ে সাদেক বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন বন্ড ডিবেঞ্চার প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ার ও অতালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে ব্যাংকের এক্সপোজেরর হিসাবের বাইরে রাখা। কৌশলগত বিনিয়োগ যা পুরো মেয়াদকাল পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে এবং যেসব সিকিউরিটিজের লেনদেন হয় না। সেই সব সিকিউরিটিজকে এক্সপোজার গণনা থেকে বাদ দেয়া।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংকের শেয়ারবাজার এক্সপোজার লিমিট গণনা করার ক্ষেত্রে শেয়ারের বাজার মূল্য অনুযায়ী গণনা না করে ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে গণনা করা। ব্যাংক তার শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারিকে প্রদত্ত ঋণের যে অংশ ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করে তা পুঁজিবাজারে এক্সপোজার হিসেবে না করে শুধু মাত্র ওই ঋণের যে অংশ শেয়ারবাজারে বিভিন্ন সিকিউরিটেজে বিনিয়োগ করা হয়, তাই ওই ব্যাংকে প্রকৃত শেয়ারবাজার এক্সপোজার হিসেবে গণনা করা।

মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, এছাড়া ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ‘সিঙ্গেল পার্টি এক্সপোজার’ গণনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে আইসিবির শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তাই আইসিবিকে সিঙ্গেল পার্টি এক্সপোজার হিসেবে গণনা করার বিষয় পুনবিবেচনা করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএমবিএ’র সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী, ডিবিএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি ড. জহির এবং বিএমবিএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ প্রমুখ।

সাংবাদিক সম্মেলনে পরে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন বন্ড ডিবেঞ্চার প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ার ও তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে ব্যাংকের এক্সপোজের হিসাবের বাইরে রাখা, কৌশলগত বিনিয়োগ যা পুরো মেয়াদকাল পর‌্যন্ত ধরে রাখা এবং যে সব সিকিউরিটিজের লেনদেন হয় না সেসব সিকিউরিটিজকে এক্সপোজার গণনা থেকে বাদ দেওয়া।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এসটি/এমএম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *