ঘটনা বহুল একটি সপ্তাহ পার করল ভারতের শেয়ারবাজার। গত বৃহস্পতিবারের আগের পাঁচ দিনে আতঙ্কগ্রস্ত বাজারে সেনসেক্স নামে ১,১২১ অঙ্ক। ২৮ হাজারের পর ভেঙে যায় ২৭ হাজারের বাঁধাও। এই জায়গা থেকেই আবার শুরু হয় ওঠা।
বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় সেনসেক্স ওঠে ৪১৬ পয়েন্ট। পরের দিন আরও ২৪৫ অঙ্ক উঠে সপ্তাহ শেষে সেনসেক্স থিতু হয় ২৭,৩৭২ অঙ্কে। খানিকটা হলেও স্বস্তি ফেরে বিনিয়োগকারীদের মনে।
বিশ্ব বাজারের কোনও কোনও ঘটনায় বাজার মাঝেমধ্যে ঝুঁকে পড়লেও দেশের কিছু আশাপ্রদ ঘটনা সামলে দিচ্ছে সূচককে। এই ধরনের বাজারে ‘পতনে ক্রয় এবং উত্থানে বিক্রয়’ নীতি মেনে চললে ভাল লাভের সম্ভাবনা।
পণ্য-পরিষেবা কর চালুর পথ সুগম করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এক সংবিধান সংশোধনী বিল অনুমোদন করে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হয়ে যেতে পারে বহু প্রতীক্ষিত পণ্য-পরিষেবা কর বা জিএসটি। আর্থিক সংস্কারের পথে এগিয়ে যাওয়ার এই খবরে কেটে যায় বিষাদের সুর। বাজারে আবার ফিরতে দেখা যায় লগ্নিকারীদের। সপ্তাহের শেষ দু’দিনে সেনসেক্স ওঠে ৭০১ অঙ্ক। হারানো জমির অনেকটাই পুনরুদ্ধার হয় মাত্র দু’দিনে।
কেন্দ্রের ধারণা, মার্চ মাসের আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্ভবত সুদ কমাবে না। বাজারের কাছে সুখের কথা, পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার সাড়ে পাঁচ বছর পরে নেমেছে শূন্যতে। অক্টোবরে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ১.৭৭%। এর আগে প্রকাশিত হয়েছিল খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৪.৩৮ শতাংশে নেমে আসার খবর।
গত সপ্তাহে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম এক সময়ে নেমে আসে ৬০ ডলারেরও নীচে। ২০০৯-এর পরে এটিই অশোধিত তেলের সব থেকে কম দাম। তেলের দাম এতটা কমলেও ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি বেড়েই চলেছে মূলত সোনা আমদানি বেড়ে ওঠার কারণে।
আমদানির কারণে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি এবং সপ্তাহের প্রথম তিন দিন বিদেশি লগ্নিকারীরা মোটা টাকার শেয়ার বিক্রি করায় ডলারের তুলনায় টাকার দাম এক সময়ে নেমে আসে ৬৩.৫৩ টাকায়, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সব থেকে কম। শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়ানোয় শুক্রবার অবশ্য ডলারের দাম কিছুটা কমে থিতু হয় ৬৩.৩০ টাকায়। সব মিলিয়ে গত সপ্তাহে ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার।কিছুটা স্ফীত হয়েছে। ২১৭ কোটি ডলার বেড়ে তা পৌঁছেছে ৩১,৬৮৩ কোটি ডলারে।
বিখ্যাত বস্ত্রনির্মাতা মন্টে কার্লো গত সপ্তাহে নথিবদ্ধ হয়েছে শেয়ার বাজারে। এদের সম্প্রতি আনা পাবলিক ইস্যুতে আবেদন ৭.৮৩ গুণ জমা পড়লেও প্রথম বাজার দর হতাশ করেছে লগ্নিকারীদের। ৬৪৫ টাকায় ইস্যু করা শেয়ার নথিবদ্ধ হয় ৫৮৫ টাকায় এবং পরে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৫৬৬ টাকায়। নতুন ইস্যুর বাজারের কাছে এটি ভাল খবর নয়।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখনও সুদ কমানোর পথে না-হাঁটলেও স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বেশ কিছু ব্যাঙ্ক তাদের কিছু মেয়াদি আমানতে সম্প্রতি সুদ ।ফলে আগামী ২০১৫ সালটি শেয়ার বাজারের জন্য নতুন কিছু সুখবর বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/তরিকুল/এএআর