চলতি ২০১৭ সালের প্রথম ছয় মাসে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান ছয় শ্রমবাজারে ১০০ জন অভিবাসী শ্রমিকের মধ্যে ৫০ জনই বাংলাদেশের। আর এসময়ে দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ থেকে গেছেন মোট শ্রমিকের ৭৮ ভাগ। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের মাত্র পাঁচভাগ। বাকি ২৩ ভাগ শ্রমিক পাকিস্তান থেকে যাওয়া। ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সংবাদে এ তথ্য জানা গেছে।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান এবং বাহরাইন ভূমধ্যসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের এই ছয় দেশে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শ্রমিকদের ৮.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। গত দুই বছরে দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান এই তিন রাষ্ট্রের শ্রমিক সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬২২ জন। ২০১৪ সালে মধ্যপ্রাচ্যের এই ছয় অর্থনীতিতে এই তিন রাষ্ট্রের শ্রমিক সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৫২ হাজার ৭৩৪ জন। ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ১ হাজার ৩৫৬ জন।
পরিসংখ্যান মোতাবেক, ২০১৩ সাল থেকে ১৬ সাল পর্যন্ত মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের ১৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ দখলে নিয়েছে। ২০১৩ সালে মধ্যপ্রাচ্যের তিন রাষ্ট্রে ভারতের শ্রমিকের সংখ্যা ৪৮ ভাগ থাকলেও গতবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৭ ভাগ। এসময়ে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের শ্রমিক ৩৭ ভাগ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ ভাগে।
ভারতীয়দের থেকে অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে বাংলাদেশী ও পাকিস্তানী শ্রমিকরা কাজ করতে আগ্রহী। যার কারণে এই দুই দেশের শ্রমিকের চাহিদা বাড়ছে। তবে ভারত সরকার ভারতীয় শ্রমিক সংখ্যা কমার জন্য চাহিদার অভাবকে দায়ী করেছে। এসব দেশের অর্থনীতির প্রাণ তেলের মূল্য কমছে। এই অর্থনৈতিক মন্দার জন্য শ্রমিকের চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে মোট জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ ৫৬ হাজার, যা সর্বশেষ তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ আর এখন বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে সবচেয়ে বেশি জনশক্তি রপ্তানি করছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি বড় খাত হল প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ৬০টি দেশে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাজ করেন। গত বছর তারা ১৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি মুদ্রা পাঠিয়েছেন। আর এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৮.৫ মিলিয়ন শ্রমিক গেছেন বিদেশে।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ ওমানে গেছে সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক। প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার শ্রমিক, যা মোট জনশক্তি রপ্তানির ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাতারে গেছে প্রায় এক লাখ ২৪ হাজার, যা মোট রপ্তানির ২২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর বাংলাদেশ থেকে ৫৮ হাজার ২৭০ কর্মী নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সৌদি আরব।
স্টকমার্কেটকবিডি.কম/এমএ/মোদক.