মার্জিন ঋণের চড়া সুদে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা

biniogনিজস্ব প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দুঃস্বপ্ন কাটছে না। গত দুই মাস ধরে সামগ্রিক বাজার ইতিবাচক থাকলেও মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীদের কোনোই লাভ হচ্ছে না। কারণ তাদের পোর্টফোলিও থেকে যে লাভ হচ্ছে তা মার্জিণ ঋণের সুদ হিসেবে কেটে রাখা হচ্ছে।

এদিকে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে আমানত এবং ঋণের সুদ হার কমলেও এর কোনো প্রভাব নেই শেয়ারবাজারের মার্জিন ঋণে। বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারহাউজের দেয়া এই ঋণে এখনো আদায় করা হচ্ছে উচ্চ সুদ। ফলে মার্জিন ঋণের বিনিয়োগে এখনো বাড়তি ঝুঁকি নিতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠান ভেদে মার্জিন ঋণে ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ সুদ আদায় করছে। গত কয়েক বছর ধরেই এই হারে ঋণ দিচ্ছে তারা। সম্প্রতি ব্যাংকিং চ্যানেলে বিপুল নগদ টাকার চাপে বিভিন্ন খাতে ঋণের সুদ হার কমেছে।

কিন্তু তার কোনোই প্রভাব নেই মার্জিন ঋণে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সুদ হার কমালেও তা ০.৫ থেকে ০.৭৫ শতাংশের বেশি নয়।

রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। টাকা খাটাতে না পারায় আমানতের সুদ হার কমিয়ে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। মেয়াদি আমানতের সুদ হার নেমে এসেছে ৭-৮ শতাংশে। একই কারণে কমিয়েছে বিভিন্ন ধরনের ঋণের সুদ হারো।

মার্চেন্ট ব্যাংক ও ট্রেকহোল্ডারের (ব্রোকারহাউজ) কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের নিজেদের তেমন কোনো তহবিল নেই। তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গ্রাহকদের ঋণ দিয়ে থাকেন।

ব্যাংকগুলো তাদের কম সুদে ঋণ না দেয়ায় তারা মার্জিন ঋণের সুদ কমাতে পারছেন না। তাছাড়া তারা সুদ হারকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে মার্জিন ঋণকে কিছুটা নিরুৎসাহিত করতে চান।

এদিকে, বিনিয়োগকারীরা বলছেন, বিনিয়োগ স্থবিরতার জন্য ব্যাংকের সুদ হার কমছে। কিন্তু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য মার্জিন ঋণের সুদের হার কমছে না। অনেকেই চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ নিচ্ছে। এটা তাদের ওপর জুলুম।

আইআইডিএফসির বিনিয়োগকারী আলমগীর হোসাইন বলেন, লোকসান দিতে দিতে আমাদের পুঁজি শেষ। এখন আমাদের যদি বাঁচতে হয় তাহলে মার্জিন ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। কিন্তু উচ্চ হারে সুদ দিয়ে আমরা বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছি না।

ব্যাংকগুলো আমানতের সুদ হার কমালেও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো কেন কমাচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রহমত পাশা বলেন, আমরা এ প্রোডাক্টিকে (মার্জিন ঋণ) বাদ দেয়ার চিন্তা করছি।

যার কারণে ব্যাংকে এফডিআর রেট কমার পরেও আমরা কামাচ্ছি না। তিনি বলেন, ২০১০ সালে বাজার ধসের অন্যতম একটি কারণ ছিল মার্জিন ঋণ। এ জন্য আমরা এটি থেকে বিনিয়োগকারীদের দূরে রাখার চেষ্টা করছি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *