মূলধনি লোকসানে থাকা মার্জিন ঋণ হিসেবে শেয়ার কেনাবেচার অধিকার আরো ৬ মাস বাড়িয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, এ সময় এক বছর বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি করা হয়। তাদের দাবি বিবেচনা করে বিএসইসি এ সময় বাড়িয়ে ৬ মাস করেছে।
কমিশন কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক এবং বিএমবিএ ও ডিবিএ মার্জিন ঋণ আইনের ৩(৫) ধারার কার্যকারিতা আরও অন্তত এক বছরের জন্য স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জেরও (ডিএসই) সুপারিশ রয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে শেয়ারবাজারে ১১৫ প্রতিষ্ঠানের বিতরণকৃত মার্জিন ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ৩৮ মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রদানকৃত মার্জিন ঋণ ছিল ৬ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। ৯৩টি ব্রোকার ডিলারের বিতরণকৃত মার্জিন ঋণ ছিল ৯ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা।
আইনের এ ধারা অনুযায়ী, মার্জিন ঋণ নেওয়া বিও হিসাবের পোর্টফোলিও মূল্য ঋণের তুলনায় ১৫০ শতাংশে নামলে মার্জিন কল করা (মার্জিন ঋণ অনুপাত সমন্বয় করতে গ্রাহককে নগদ অর্থ প্রদানের নোটিশ) বাধ্যতামূলক। গ্রাহক অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী নোটিশে সাড়া না দিলে তার হিসাবে শেয়ার কেনাবেচা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শেয়ারবাজারে ধস নামার পর সংশ্লিষ্টদের অনুরোধে কয়েক বছর এ ধারার কার্যকারিতা স্থগিত করেছিল বিএসইসি। সর্বশেষ এর মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ ডিসেম্বর।
তবে মূলধনি লোকসানে থাকা মার্জিন ঋণ হিসাব শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান না করায় এর প্রকৃত পরিমাণ জানা যায় না। তবে বিএমবিএর সভাপতি ছায়েদুর রহমান জানান, ২০১৫ সাল শেষে হিসাব অনুযায়ী মূলধনি লোকসানে থাকা মার্জিন ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। গত বছরেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রাইট-অফ (লোকসানেই মার্জিন ঋণ হিসাবের শেয়ার বিক্রি) করায় এর পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউসগুলো জানিয়েছে, শেয়ারদরে ধসের কারণে ২০১১ সালের পর মার্জিন ঋণগ্রহীতাদের বেশিরভাগই শেয়ারবাজার ছেড়েছেন। তাদের বড় অংশের মূলধনি লোকসান থাকায় ঋণে তাদের সব শেয়ার বিক্রি করলেও ঋণ আদায় হবে না। এছাড়া প্রভিশনিং ও ট্যাক্স আইনের কারণে ওই ঋণের বিপরীতে সুদ গণনাও বন্ধ আছে। এ ঋণ থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুনাফা বা ঋণের অর্থ ফেরত পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ