এক হাজার ২৯০ কোটি টাকার বিনিময়ে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মালিকানায় আসছে চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ।
আজ শনিবার ডিএসই’র বোর্ড সভায় চীনা এ প্রতিষ্ঠান দুটিকে মনোনীত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী।
তিনি বলেন, গত বোর্ড সভায় প্রতিষ্ঠান দুটির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। শনিবার বোর্ড সভায় এর অনুমোদন দেওয়া হবে। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) কাগজপত্র পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিএসই’র মালিকানায় বিদেশি কোম্পানি আসলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবেন। এতে ডিএসই কারিগরিভাবে শক্তিশালী হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবেও মর্যাদা পাবে। যা দেশের শেয়ারবাজারে নতুন দিগন্ত খুলবে।
ডিমিউচ্যুয়ালাইজড স্টক এক্সচেঞ্জের মূল উদ্দেশ্য ছিলো ডিএসই’র মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদা করা, বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ এবং কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে মালিকানা দেওয়া। সেই লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন করা হয়। আইনে শতভাগ মালিকানা থেকে ডিএসই’র বর্তমান সদস্যদের মালিকানা রাখা হয় ৪০ শতাংশ। বাকি ৬০ শতাংশের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বা কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় ২৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য রাখা হয় ৩৫ শতাংশ শেয়ার। সেখানে ডিএসই’কে ১৮০ কোটি শেয়ারে কনভার্ট করা হয়।
এদিকে, কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের হিসেবে ডিএসই’র ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৪৫ কোটি টাকার শেয়ার ২২ দামে ৯৯০ কোটি টাকায় কিনতে প্রস্তাব দেয় চীনা প্রতিষ্ঠান দুটি। পাশাপাশি ডিএসই’র কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা (৩৭ মিলিয়ন ডলার) খরচ করবে বলে প্রস্তাব আসে। সব মিলে দাঁড়ায় এক হাজার ২৯০ কোটিরও বেশি টাকায়।
এর তিন মাস আগে কৌশলগত বিনিয়োগকারী পেতে ডিএসই দরপত্র আহবান করে। উন্নত প্রযুক্তি সুবিধা, ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসা উন্নয়নে পরামর্শক সেবা পাওয়ার লক্ষ্যে করা এই দরপত্রে সাড়া দেয় চীনের এই দুই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম। তাদের সঙ্গে ভারত, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি কনসোর্টিয়ামও প্রস্তাব দিয়েছে। তবে সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাবই আকর্ষণীয়।
চীনের প্রধান তিনটি স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে সাংহাই ও শেনজেন রয়েছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে। বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের সেরা ১০টি স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাতেও রয়েছে তারা।
সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন দুই দশমিক দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অপরদিকে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন চার লাখ ১৩ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ