মূলধন ঘাটতি পূরণে অর্থ মন্ত্রণালয় ও ব্যাংকের এমডিরা

minitry-smbdনিজস্ব প্রতিবেদক :

সরকারি মালিকানার ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ নিয়ে আরও পর্যালোচনা করা হবে। সরকারি আট ব্যাংকের মধ্যে সাতটিতেই বর্তমানে ১৫ হাজার কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি আছে। এ ঘাটতি কীভাবে মেটানো হবে_ সে বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এই বৈঠকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান এবং ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির ওপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় বৈঠকে। এর মধ্যে ৬টি বাণিজ্যিক ও দুটি বিশেষায়িত ব্যাংক রয়েছে। এগুলো হলো- সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী, বেসিক, বিডিবিএল এবং বিশেষায়িত কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব ব্যাংকের মোট মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৯৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতিতে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৮৩ কোটি টাকা। আগের বছর শেষে ছিল ছয় হাজার ৮১৮ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি সামান্য কমে তিন হাজার ৪৭৫ কোটি টাকায় নেমেছে। তালিকায় তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা বেসিকের ঘাটতি ১ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা হয়েছে। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ঘাটতি ৭৮১ কোটি টাকা থেকে কমে ৭৪৩ কোটি টাকা হয়েছে। অন্যদিকে ডিসেম্বর শেষে প্রয়োজনীয় মূলধনের তুলনায় বেশি সংরক্ষণে সক্ষম হয়েছে তিন সরকারি ব্যাংক। এগুলোর মধ্যে অগ্রণীর ৪৭ কোটি, বিডিবিএলের ৭৬১ কোটি ও জনতা ব্যাংকের ৭৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে।

ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ন্যুনতম ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি, সে হারে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। ঋণ জালিয়াতি, অর্থ লোপাটসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে এসব ব্যাংকে দীর্ঘদিন ধরে মূলধন ঘাটতি হয়ে আসছে। সরকারও বারবার জনগণের করের টাকায় ব্যাংকগুলোর মূলধন জোগান দিয়ে আসছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা রয়েছে।

গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এমডিরা নিজ নিজ ব্যাংকের সমস্যার কথা বললেও বৈঠকে বেসিক ব্যাংক নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। বেসিক ব্যাংকের পক্ষ থেকে আলাদা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বলা হয়, এর অবস্থা ভালো হচ্ছে। লোকসান অতিক্রম করে গত বছর ব্যাংকটি ৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি বর্তমানে ২ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। এ ঘাটতি পূরণে নগদ টাকা অথবা বন্ড ইস্যুর প্রস্তাব করা হয়।

অন্যান্য ব্যাংকের এমডিরা মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য নিজ নিজ যুক্তি তুলে ধরেন। কিন্তু মূলধন জোগানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এসএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *