নিজস্ব প্রিতেবদক : নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের ঘটনা সম্পর্কে যা সত্য, তাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিকে বলেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) মোখলেছুর রহমান।যা সত্য তাই বলেছি: র্যাবের ডিজি
র্যাবের ডিজি মোখলেছুর রহমান- ফাইল ছবি
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত এ কমিটির আহ্বায়ক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী মোল্লার কক্ষে দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা ধরে র্যাব প্রধানের সঙ্গে কথা বলে কমিটি।
পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। যেহেতু আমি র্যাবের ডিজি। সে কারণে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা বাঞ্ছনীয়। আমার কাছে যা জানতে চেয়েছে, আমি সব কিছুই বলেছি। যেটা সত্য সেসব কিছুই আমি বলেছি।’
গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় সম্পর্কে কমিটিকে বলেছেন কিনা- জানতে চাইলে র্যাব প্রধান বলেন, ‘যেহেতু কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সেহেতু সব বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। সব বিষয়েই বলেছি।’
নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় র্যাবের ভাবমূর্তি জড়িত, তাই আপনি কী সুপারিশ দিয়েছেন- জানতে চাইলে র্যাবের ডিজি বলেন, ‘র্যাবের স্বচ্ছতা আছে, র্যাব যেটা সত্য সেটাই করে। র্যাব আইন, ন্যায় ও সত্যের পথে সব সময় থাকে- এটা আমি বলেছি। আমার কাছে যা জানতে চেয়েছে, আমি তাই বলেছি।’
এদিকে, তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে পরামর্শ দিয়েছি।’
কী বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে- জানতে চাইলে কমিটি প্রধান বলেন, ‘যেসব বিষয় মিডিয়াতে এসেছে, সেসব বিষয় অন্যান্য সাক্ষীর মাধ্যমে এসেছে এবং যেসব তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে সেই সম্পর্কিত বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পরপরই নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করা হয়। নূর হোসেন র্যাবকে ৬ কোটি টাকা দিয়ে হত্যা করিয়েছেন অভিযোগ করেন নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান।
সাত খুনের ঘটনায় র্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। এরপরই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করলে কয়েক দফা রিমান্ডের পর সাত খুনে নিজেদের ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে তারা জবানবন্দি দেন। র্যাবের ওই তিন কর্মকর্তা ছাড়াও আরও সাত জন আদালতে ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে জবানবন্দি দেন।