শেয়ারবাজারের ৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপির তালিকায়

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বহির্ভূত ৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মেয়াদি ঋণ নিয়ে তারা পরিশোধ করতে পারছে না।

প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবং প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। এসব প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) প্রতিবেদন দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো।

প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হলে তাদের পক্ষে আর নতুন ঋণ পাওয়া সম্ভব নয়। আইনের কারণে আলোচ্য প্রতিষ্ঠানগুলোও নতুন করে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারছে না।

একই সঙ্গে কল মানি মার্কেট থেকেও ঋণ নিতে পারছে না। তবে গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত নেয়ার ব্যাপারে কোনো বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু এদের আর্থিক দুর্বলতার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় আমানতকারীরা এখন আর টাকা রাখছে না। বরং জমা টাকা তুলে নিতে চাচ্ছে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো আমানতকারীদের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ২২টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ১৭০ কোটি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ১৮৫ কোটি, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) ২১৯ কোটি, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৫০ কোটি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৩৮ কোটি এবং প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ২০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে।

সূত্র জানায়, খেলাপি হওয়ার পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ঋণের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়েছে। তারপরও তারা ঋণ শোধ করতে পারছিল না।

এ অবস্থায় ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নালিশ করেছে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হিসাবে টাকা থাকলে তা থেকে যেন কেটে দেনা শোধ করে দেয়া হয়, এমন প্রস্তাবও এসেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবেও তাদের পর্যাপ্ত অর্থ নেই। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকও কিছু করতে পারেনি। তাদের নির্দেশেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো।

এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ৩০ কোটি টাকার একটি এফডিআর বন্ধক রেখে প্রাইম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ কোটি টাকা করে ৬০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তহবিলের বড় অংশই আসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে মেয়াদি আমানত ও কল মানি মার্কেট থেকে ধার নিয়ে চলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এর বাইরে রয়েছে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানত।

ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ ও গ্রাহকদের আমানত পরিশোধে ব্যর্থতার দায়ে ইতোমধ্যে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসকে অবসায়ন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানিকেও (বিআইএফসি) অবসায়ন করার অনুমতি চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *