স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, শেয়ারবাজার কত নিচে যেতে পারে আমি দেখতে চাই। এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ। আপনারা নিজেদের এবং আমার উপর বিশ্বাস রাখবেন। দেশের অর্থনীতি যত বড় হবে, শেয়ারবাজারও তত বড় হবে। শেয়ারবাজারকে ঠেলে দিয়ে অর্থনীতির কথা চিন্তা করা যায় না। তাই পেছনের সব ভুল ত্রুটি সমাধানের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। এছাড়া শেয়ারবাজারের উন্নয়নে মাঝেমধ্যে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনায় বসব।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আয়োজিত ‘বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা কনফারেন্স ঢাকা-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বের শেয়ারবাজারে পতন হয়। এটা স্বাভাবিক পক্রিয়া। ভারতে ২০০৮ সালে, জাপানে ১৯৮৯ সালে, আমেরিকায় ২০০৮ সালে সূচকের ব্যাপক পতন হয়েছে। তবে পরবর্তীতে তা আবার পূরণ হয়েছে।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য শিক্ষা নিতে হবে। প্রথমে ঠিক করতে হবে আমরা কোথায় যাচ্ছি। এটা মাছ বাজার বা কাঁচা বাজার নয়। এ বাজার আমাদের দ্বারাই পরিচালিত। আমরাই খরিদ্দার আবার আমরাই বিক্রেতা। এখানে কেউ কেউ খুব তাড়াতাড়ি বড় লোক হওয়ার জন্য আসে। এটা মোটেই ঠিক নয়।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার ওপর আপনারা বিশ্বাস রাখবেন। কিন্তু বিশ্বাসের ওপর ভর করে বিনিয়োগ করবেন না। জেনে এবং বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করবেন। আমরা সবাইকে বিজয়ী করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করব এবং যারা বিনিয়োগ করবে তাদের বিজয়ী করব। এই বাজারে আমরা কেউ কারও শত্রু নই।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, আমি অবাক হয়ে গেলাম। পত্রিকায় আমার ছবি ছাপা হচ্ছে। আমার কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়ে গেছে। আমার কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লে আমার কী লাভ। কোম্পানি তো শেয়ার বিক্রি করে না। যদি বিক্রি করে সেটা ক্ষতিকর। অনেক কোম্পানি এমন আছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর বিশ্বাস করে প্রচুর বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেছেন। তাদের ওপর আস্থা রেখে আমি কিন্তু শেয়ার বিক্রি করতে পারিনি। আমার শেয়ার দাম ৩ হাজার টাকা হয়েছিল। আমি কয়েক হাজার কোটি টাকা মার্কেট থেকে নিতে পারতাম। আমি একটা শেয়ারও বিক্রি করিনি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে অনুমতি নিয়ে আমার সব শেয়ার বিক্রি করেছি। আমি চাইলে অনেক প্রফিট করতে পারতাম। কিন্তু ঠিক হতো না, এটা অন্যায়।’
তিনি আরো বলেন, আমরা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য মিথ্যা রটিয়ে আরেকজন ঠকাই। এটা ঠিক না। এই বাজারে সম্পৃক্ত সবাইকে ভালো বলা যাবে না। অনেকেই দ্রুত লাভবান হতে চায়। এটা করতে গিয়ে অনেকই সর্বস্ব হারিয়ে ফেলে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগকারীরা অর্থনীতির স্পন্দন। তাদের ছাড়া অর্থনীতির চাকা ঘুরবে না। তাই বিনিয়োগকারীদের গুরুত্ব অপরীসিম। তবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদেরকে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সকালে শেয়ার কিনে বিকালে বিক্রি করার জায়গা এটা না।
বিনিয়োগকারীদের যাকাত দেয়ার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা যাকাত দেন না। যাকাত না দিলে বাজার কীভাবে বড় হবে। আপনাদের টাকা কীভাবে হালাল হবে। আপনারা যাকাত দেন।
এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, ড. স্বপন কুমার বালা ও খন্দকার কামালউজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/