শেয়ারবাজার স্থিতিশীল রাখতে বিএসইসির তিন উদ্যোগ

bsecনিজস্ব প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল রাখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন তিন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গতকাল কমিশনের নিয়মিত সভায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়।

উদ্যোগগুলো হচ্ছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগে প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে ছাড়, মার্জিন ঋণের কারণে যেসব গ্রাহকের ইক্যুয়িটি ঋণাত্মক হয়ে গেছে তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বাজারে লেনদেন করার সুবিধা এবং আইসিবির ৮টি মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অবসায়নের সময়সীমা বেঁধে দেয়া।

জানা গেছে, শেয়ারবাজারে মন্দা অব্যাহত থাকায় সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের কারণে আয়ের একটি বড় অংশই চলে যাচ্ছে প্রভিশিনিং করতে গিয়ে। এ কারণে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো মুনাফার মুখ দেখছে না।

অবশেষে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগজনিত ক্ষতির কারণে প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে বিএসইসি। এগুলো হচ্ছে ইউনিটির গড় ক্রয়মূল্য থেকে চলতি বাজার দামে ফান্ডের ইউনিটের সম্পদমূল্যের ৮৫ শতাংশ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট অংশ প্রভিশনিং করতে হবে।

ধরা যাক কোনো একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গড়ে ১২০ টাকার মেয়াদি ফান্ড ক্রয় করেছে। এখন বাজার দামে ফান্ডটির সম্পদমূল্য ১০০ টাকায় নেমে এসেছে। সেক্ষেত্রে প্রভিশনিং রাখতে হবে [১২০-(১০০এর ৮৫শতাংশ)] টাকা =(১২০-৮৫) টাকা ৩৫ টাকা। আর বে-মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের গড় ক্রয় মূল্য থেকে বে-মেয়াদি ইউনিটের পুনঃক্রয়মূল্য বাদ দিয়ে অবশিষ্ট অংশ প্রভিশনিং করতে হবে।

মার্জিন ঋণের কারণে যেসব গ্রাহকের ইক্যুয়িটি ঋণাত্মক হয়ে গেছে তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বাজারে লেনদেন করতে পারবেন। চলতি ৩০ জুন পর্যন্ত মার্জিন গ্রাহকদের জন্য এ সুবিধা দেয়া হয়েছিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং পুঁজিবাজারের স্বার্থ তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর রুল ৩ (৫) এর কার্যকারিতা ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে বলা হয়, কোনো বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তার কাছে নতুন করে মার্জিন চাইবে।

আর এ মার্জিনের পরিমাণ এমন হতে হবে যাতে তার ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের উপরে থাকে। নতুন মার্জিন নগদ টাকা অথবা লেনদেনযোগ্য শেয়ার বা বন্ডে দেয়া যাবে। মার্জিন জমা না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর হিসাবে কোনো লেনদেন করা যাবে না।

ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ৮টি মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অবসায়নের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে বিএসইসি। বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে ফান্ডগুলোকে অবসায়ন করতে হবে না হলে নিয়ম অনুসরণ করে বে-মেয়াদি ফান্ডে রূপান্তর করতে হবে।

কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রূপান্তর বা অবসায়নের জন্য প্রথম মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২য় ফান্ডের জন্য ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি, ৩য় ফান্ডের জন্য ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি, ৪র্থ ফান্ডের জন্য ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ, ৫ম ফান্ডের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল, ষষ্ঠ ফান্ডের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ জুন, ৭ম ফান্ডের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ও ৮ম ফান্ডের জন্য ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে।

এদিকে এইমস পরিচালিত ফার্স্ট গ্যারান্টিড মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এবং গ্রামীণ ওয়ান : ফার্স্ট স্কিম অব দ্য গ্রামীণ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রূপান্তর বা অবসায়নের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কমিশন।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম/জেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *