প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার দেশব্যাপী প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ শিক্ষা এবং বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য সব ধরনের নিরাপত্তা দেওয়ার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল শেয়ারবাজার গঠনে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজার গঠনে কাজ করে যাচ্ছে, এর ফলে দেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হবে।’
সোমবার সকালে (৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘রিজিওনাল সেমিনার অন ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট প্রোটেকশন’ শীর্ষক চার দিনের এক সেমিনারের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজার গড়ে তোলার জন্য ধারাবাহিকভাবে পলিসি সাপোর্ট, আইনগত সংস্কার, অবকাঠামো র্নিমাণসহ নানাবিধ সহযোগিতা দিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজারের বিভিন্ন পর্যায়ে অনিয়ম দূর করে জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা হয়েছে।’
শেয়ারবাজারে ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শেয়ারবাজার এখনও ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীর ওপর নির্ভরশীল।’ তিনি শক্তিশালী শেয়ারবাজার গঠনে দৈনন্দিন লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি দক্ষ বিনিয়োগ গোষ্ঠী গড়ে তুলতে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ‘বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’
ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ঝুঁকি হ্রাস করতে বিএসইসি দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, এ কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এর আওতায় বিভাগীয় শহরগুলোতে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে তা সব জেলা সদরে অনুষ্ঠিত হবে।’
শেয়ারবাজারে খেয়াল খুশিমতো বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে তিনি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মূলত, বিনিয়োগকারীরাই হলো বাজারের মূল চালিকাশক্তি। তাই তাদের সচেতনতার বিষয়টি শক্তিশালী শেয়ারবাজার গড়ার অন্যতম পূর্বশর্ত।’
তিনি বলেন, ‘জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করলে একদিকে যেমন প্রত্যেকের বিনিয়োগ ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা বাড়ে, অন্যদিকে নিশ্চিত হয় বাজারের স্থিতিশীলতা।’
এই বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করেই আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারে দেশব্যাপী বিনিয়োগ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্প্রসারণের ওপর জোর দেয়, বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীসহ, শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের বিনিয়োগ দক্ষতা ও কলাকৌশল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে ত্বরান্বিত করবে।’
এতে অন্যান্য প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার দিকটি অধিকতর নিশ্চিত হয়ে বিকশিত একটি শেয়ারবাজার গড়ে উঠবে এবং এই শেয়ারবাজার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হতে আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন খাতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের অন্যতম উৎস হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সেমিনারে ভারত, জাপান, ফিলিপিন্স, নেপাল, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং আইসল্যান্ডের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ এবং বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. মো. খায়রুল হোসেন বক্তৃতা করেন।
সেমিনারে দেশের উন্নয়নে শেয়ারবাজারের ভূমিকা শীর্ষক একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। বাসস
স্টকমার্কেটবিডি.কম/বি