সেবার মানোন্নয়নে ব্যাংকখাতে প্রতিযোগিতা আবশ্যক

00000000000000000স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে ব্যাংকখাতে প্রতিযোগিতার প্রয়োজন আছে। প্রতিযোগিতার কারণেই ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রতিযোগিতা না থাকলে সব ব্যাংকের সেবার মান একই রকম হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) ‘কম্পিটিশন, কনসেনট্রেশন অ্যান্ড ব্যাংকিং স্ট্যাবিলিটি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্যানেল আলোচনায় বক্তারা এ কথা বলেন।

কর্মশালার উদ্বোধন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম. মনিরুজ্জামান বলেন, আগে ব্যাংকগুলোর স্বাধীনতা, নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হতো, এখন বলছি প্রতিযোগিতার কথা। দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিযোগিতা বেড়েছে। একই সঙ্গে আমানতের প্রবৃদ্ধি, সম্প্রসারণ ও শাখার পরিধি বাড়বে। এতে গ্রাহকদের সেবার মান উন্নত হবে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএম’র সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলোর শাখা শ‍ুধু সম্প্রসারণ করলে হবে না, এটি সঠিক জায়গায় করতে হবে। দেখা যাচ্ছে অল্পসংখ্যক গ্রাহকের জন্য অনেক বেশি ব্যাংক সেবা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে গ্রাহক-তো ব্যাংক বদলাবেই। যেখানে সেবার মান ভালো হবে, সেখানে যাবে।

বিআইবিএম’র সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলী বলেন, ব্যাংকগুলোর প্রতিযোগিতার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে। গ্রাহক যেভাবে সরকারি ব্যাংকে আমানত রেখে নিশ্চিন্তে থাকেন, সেভাবে বেসরকারি ব্যাংকেও গ্রাহকের আমানতের নিশ্চয়তা দিতে হবে। সরকারি ব্যাংকের তুলনায় বেসরকারি ব্যাংকে সেবার মান ভালো হলেও আমানতের অনিশ্চয়তা বেশি।

ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী বলেন, ব্যাংকিংখাতে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকতে হবে। এতে গ্রাহকরা উপকৃত হবেন। যোগ্য ব্যাংকগুলো প্রসারিত হবে।

সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিংখাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হলেও নতুন নতুন পণ্যের উদ্ভাবন কম। পুরনো পণ্যের উপর নির্ভর করেই চলছে ব্যাংকিংখাত। ব্যাংকিংখাতের ৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও নতুন কোনো পণ্য চালু হয়নি।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী ওসমান আলী বলেন, ব্যাংকগুলোর ট্রেড ফাইন্যান্সিং ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ। রাজশাহী ও খুলনায় কেন হচ্ছে না, এসব জায়গায় নজর দিতে হবে। ট্রেড-ফাইন্যান্সিংয়ের বাইরে এসএমই খাতে ঋণ আরও বাড়াতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ব্যাংকিংখাতে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকতে হবে। না থাকলে মার্কেট সম্প্রসারণ হবে না। এটি করতে না পারলে গ্রাহকরা সুবিধা পাবে না। আর যোগ্যরা সবসময় কর্মস্থল বদলাবে। কারণ তাদের চাহিদা রয়েছে।

সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএম’র মহাপরিচালক মহা. নাজিমুদ্দিন বলেন, জনগণের ব্যাংক জনগণের মাধ্যমে পরিচালিত হলেও ম্যানেজমেন্টের একটি প্রভাব রয়েছে। ব্যাংকের উন্নয়নে ভালো কিছু করার চেষ্টা করলে অনেক সময় কর্মকর্তাদের চাকরি চলে যায়। এসব বন্ধ করে সেবার মানোন্নয়নে কর্মকর্তাদের কাজের সুযোগ দিতে হবে।

কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএম’র সাবেক অনুষদ সদস্য আব্দুল কায়উম মোহাম্মাদ কিবরিয়া।

সঞ্চালক বিআইবিএম’র চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ব্যাংকিংখাতে সুস্থ প্রতিযোগিতা প্রয়োজন। সুস্থ প্রতিযোগিতা এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *