২০১৪ সালে সফল ছিল ভারতের শেয়ারবাজার

indiaস্টকমার্কেট ডেস্ক :

গত বুধবার শেষ হয়েছে ২০১৪ সালের শেয়ার লেনদেনে। ২০০৯ সাল থেকে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়ে বছর শেষ করল ভারতের দুই সূচক সেনসেক্স, নিফটি। বাজারে শেয়ার-মূল্য বাড়ার হাত ধরে বিনিয়োগকারীদের ঘরে এল আরও ২৮ লক্ষ কোটি টাকা।

তবে সারা বছরের হিসাবে ডলারে রুপির দাম পড়েছে ১২৩ পয়সা বা ১.৯৯%। ২০১৩-র শেষে ডলারে রুপির দর ছিল বেশি। এক ডলার ছিল ৬১.৮০ রুপি। এই নিয়ে টানা চার বছর পড়ল রুপি।

বছর শেষে সেনসেক্স সুচক দাঁড়ায় ২৭,৪৯৯.৪২ পয়েন্টে। নিফটি সুচক বেড়ে ছুঁয়েছে ৮,২৮২.৭০ পয়েন্ট। যে সমস্ত কারণে ২০১৪ সালে লগ্নিকারীদের খুশির খবর দিল শেয়ার বাজার, তার একটি খতিয়ান দিয়েছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। যার মধ্যে রয়েছে:
• কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে মোদী সরকারের ক্ষমতায় আসা
• আর্থিক সংস্কার দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি
• ভারতের বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার ভাল লগ্নি
• বৃদ্ধির হার বাড়ার আশা
• উন্নত দুনিয়ায় মন্দার প্রকোপ কমে আসা
• বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ২০০৮-এর পর সর্বাধিক কমা

উলেখ্য ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ২৮ হাজার পয়েন্টের মাইল ফলক স্পর্শ করে ভারতের শেয়ার বাজার ।সারা বছর ভালো করেছে বিদ্যুৎ, আবাসন, ভোগ্যপণ্য, ওষুধ, তেল ও গ্যাস সংস্থার শেয়ার। তবে উৎপাদন শুল্কে ছাড় উঠে যাওয়ার খবরে পড়েছে গাড়ি শিল্পের শেয়ার।

নতুন বছরেও শেয়ার বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা। এ দিন কোটাক সিকিউরিটিজ-এর সিইও কমলেশ রাও বলেন, “ভারতের বাজার এই মুহূর্তে অত্যন্ত লাভজনক। আর, সেই কারণেই লগ্নিকারীদের এই বাজার অন্যতম পছন্দের। আগামী বছরেও এই প্রবণতা চলবে বলেই আমার আশা।”

সূত্র- হিন্দুস্থান টাইমস

স্টকমার্কেটবিডি.কম/তরি/এইচ

বিশ্বের সবচেয়ে লোকসানি রাশিয়ার শেয়ারবাজার

worldস্টকমার্কেট ডেস্ক :

আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এমএসসিআইয়ের সমন্বিত সূচকভুক্ত শেয়ারবাজারগুলোর মধ্যে ২০১৪ সালে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে ছিল রাশিয়া। মূলধনি লাভ-লোকসান ও লভ্যাংশ মিলিয়ে এর বিপরীতে সবচেয়ে ভালো করেছে মিসর।

ইউক্রেন সংকট ও পশ্চিমা অবরোধে রাশিয়ার আর্থিক ও অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা আরো তীব্র হয় ২০১৪ সালে। কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে লভ্যাংশ পেয়েও ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে রাশিয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে বড় মূলধনি লোকসানের পড়েছে বিনিয়োগকারীরা।

এমএসসিআইয়ের হিসাবে, ২০১৪ সালে রাশিয়ার শেয়ারবাজারে ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ লোকসান করেছে বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা, যা এমএসসিআইয়ের পর্যবেক্ষণ তালিকাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

প্রায় ১৮ মাস আগে তত্কালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাতাহ আল সিসি দেশটির প্রেসিডেন্ট হয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন। ফলে উন্নয়নশীল মিসরের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা ডলারে ৩১ দশমিক ১ শতাংশ মুনাফা করেছে, যা ২০১৪ সালে সর্বোচ্চ।

বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। এর বাস্তবায়ন পর্ব মূল্যায়নের সময় এখনো আসেনি। তবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে মিসরের ওপর। আরব বসন্ত-পরবর্তী বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ের পর এমএসসিআইয়ের মিসর সূচকটি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

ইতিবাচক তালিকার দুই নম্বরে ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া। গত বছরে নির্বাচিত নতুন প্রেসিডেন্ট জকো উইডোডো ইন্দোনেশীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার করবেন— এমন আশাবাদ বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়িয়েছে দেশটির শেয়ারবাজারের ওপর। পাঁচ বছর ধরেই অবশ্য এমএসসিআইয়ের সেরা ১০ তালিকায় আছে ইন্দোনেশিয়া। ২০১৪ সালে সেখানকার বাজার থেকে গড়ে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ মুনাফা ঘরে তুলেছে বিদেশী তহবিলগুলো।

তিন নম্বরে আছে ফিলিপাইন। ২০১০ সালে সংস্কারমুখী বেনিগনো অ্যাকুইনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একটি স্থিতিশীল ঊর্ধ্বমুখী ধারায় আছে ম্যানিলার শেয়ারবাজার। গত বছর সেখান থেকে ডলারে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ মুনাফা করেছে বিনিয়োগকারীরা।

এর পর পরই ছিল নরেন্দ্র মোদির ভারত। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির বিজয়ে ঐতিহাসিক সর্বোচ্চের রেকর্ড ভাঙে মুম্বাইয়ের শেয়ারবাজার।

আগস্টে প্রধানমন্ত্রী থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া এরদোগানের সংস্কার ক্ষুধা নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও তুরস্কের শেয়ারবাজার গত বছর ডলার বিনিয়োগকারীদের ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ মুনাফা দিয়েছে।

গত মে মাসে সামরিক শাসন জারির পর অন্তত স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে থাইল্যান্ডের বাজার থেকে এক বছরে ১৬ শতাংশের বেশি মুনাফা করেছেন বিনিয়োগকারীরা।

কিছুটা অবাক করার মতো বিষয়, বৈশ্বিক পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে এগিয়ে থাকার পরও মার্কিন শেয়ারবাজার গত বছর বিনিয়োগকারীদের মাত্র সাড়ে ১৪ শতাংশ মুনাফা দিয়েছে।

লোকসানি বাজারগুলোর তালিকায় রাশিয়ার পর পরই ছিল পর্তুগাল। বড় একটি স্থানীয় ব্যাংকের বেল আউটই ছিল বিনিয়োগকারীদের অনাস্থার মূল কারণ। গত বছর লিসবনে ৩৭ শতাংশেরও বেশি লোকসান করেছে বিদেশীরা, যা ইউরোপের বাজারগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

ইউরো অঞ্চলের কিছুটা প্রান্তিক দেশ হিসেবে বিবেচিত অস্ট্রিয়ার ২৯ শতাংশ লোকসান করেছেন ডলার বিনিয়োগকারীরা।

ইউক্রেন সংকটের জের টানতে হয়েছে বুদাপেস্টের শেয়ারবাজারকেও। গত বছর সেখানে প্রায় ২৭ শতাংশ লোকসান করেছে বিদেশী তহবিলগুলো। পোল্যান্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউরোপ-রাশিয়া টানাপড়েনে।

চিলি, কলম্বিয়া, ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার এ তিন দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের লোকসান গুনতে হয়েছে মূলত স্থানীয় নিয়ামকগুলোর কারণে।

ফেরিডুবি, ভোক্তা আস্থা হ্রাস, রফতানি আয় প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি ইত্যাদি কারণে সিউলের শেয়ারবাজারেও লোকসান গুনতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের, যদিও সেখানকার করপোরেশনগুলোর লভ্যাংশ বিশেষ কমেনি গেল বছর।

সূত্র : ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এএআর