নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত শেয়ার লেনদেন থেকে অর্জিত আয়ের ওপর বিদ্যমান ১০ শতাংশ ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসই। এ ছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের আয়কে আগামী পাঁচ বছরের জন্য শতভাগ কর অব্যাহতি সুবিধা চেয়েছে সংস্থাটি। শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত কম্পানিগুলোর করপোরেট করহার আরো আড়াই শতাংশ কমানোর সুপারিশও করেছে ডিএসই। সংস্থাটির মতে, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে বাজারে গতি বাড়বে, ফিরবে স্থিতিশীলতাও।
ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা স্বাক্ষরিত এসব প্রস্তাব গত ২৯ মার্চ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে পাঠানো হয়েছে। এসব প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছে ডিএসই।
ডিএসই এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে বলেছে, চলতি অর্থবছর শতভাগ কর অব্যাহতি সুবিধা থাকার কারণে এ খাত থেকে সরকার মোটেই কোনো রাজস্ব পায়নি। তাই আগামী বছরগুলোতেও শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হলে সরকারের রাজস্ব আয়ে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
বর্তমানে কোনো শেয়ার, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড বা অন্য সিকিউরিটিজ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের দশমিক ০৫ শতাংশ হারে কর কর্তনের বিধান রয়েছে।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নতুন অর্থবছরে এটি কমিয়ে দশমিক ০১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করে ডিএসই বলেছে, এ হার কমানো হলে শেয়ার হস্তান্তরে খরচ কমবে। বাজারে লেনদেনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তখন সরকারের রাজস্বও বাড়বে।
উদাহরণ দিয়ে ডিএসই বলেছে, লিমিটেড কম্পানি হিসেবে একটি কম্পানি করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে ৩৫ শতাংশ হারে আয়কর দিচ্ছে। অর্থাৎ, ১০০ টাকা মুনাফা হলে কর পরবর্তী মুনাফা থাকছে ৬৫ টাকা। ওই প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারি কম্পানিকে আবার ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হচ্ছে। তখন কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়াচ্ছে ৫২ টাকা। আবার চূড়ান্তভাবে ব্যক্তি কর পরিশোধ করতে হচ্ছে ২৫ শতাংশ হারে। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে ১০০ টাকায় কর দিতে হচ্ছে ৬১ টাকা, আর বিনিয়োগকারীর থাকছে মাত্র ৩৯ টাকা।
বিদ্যমান আয়কর আইনে মোট মুনাফা থেকে ২০ হাজার টাকা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট মুনাফার ওপর করারোপের কথা বলা আছে। মূলত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্যই ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা দেওয়া আছে। আগামী অর্থবছরে এর পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করে ডিএসই বলেছে, অস্থির বাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অনেক লোকসান হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত মুনাফা করা হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবেন। চলতি অর্থবছরের আয়কর নীতি অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত কম্পানিগুলোর আয়ের ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ ও নিবন্ধিত নয় এমন কম্পানির ওপর ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর বহাল রয়েছে। নতুন অর্থবছরে নিবন্ধিত কম্পানিগুলোর ওপর আরোপিত করহার কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে ডিএসই। নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর ওপর থেকে করের বোঝা কমালে আরো বেশি কম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে উৎসাহ পাবে বলে মনে করে ডিএসই।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম/এএআর