উচ্চ প্রিমিয়ামে শেয়ার কিনে এখন মাশুল দিচ্ছেন ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে বিনিয়োগকারীরা। গত দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর একবারও ইস্যু মূল্য স্পর্শ করেনি। অন্যদিকে ধারাবাহিকভাবে কমছে কোম্পানিটির ইপিএস। চলছে মুনাফায় ভাটা। সব মিলিয়ে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরাও রয়েছেন লোকসানে।
উল্লেখ্য, প্রতিটি শেয়ারে চার টাকা ৫৫ পয়সা আয় দেখিয়ে শেয়ারবাজার থেকে উচ্চ প্রিমিয়ামে মূলধন সংগ্রহ করেছিল ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট। তালিকাভুক্তির সময় কোম্পানিটি প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে প্রিমিয়াম নেয় ৬৫ টাকা। সে সঙ্গে ১০ টাকা অভিহিত মূল্য যোগ হয়ে শেয়ারের ইস্যু মূল্য দাঁড়ায় ৭৫ টাকা। বর্তমানে প্রতিটি শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছে ৪৩ থেকে ৪৫ টাকায়। গত দুই বছরে শেয়ারদর একবারও ইস্যু মূল্য স্পর্শ করতে পারেনি। ফলে যারা এ প্রতিষ্ঠানের আইপিও বিজয়ী হয়েছেন তারা এখন লোকসানে রয়েছেন।
এদিকে ধারাবাহিকভাবে কমছে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ও শেয়ারপ্রতি আয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোম্পানিটি ২০১১ সালে প্রতিটি শেয়ারের ইপিএস চার টাকা ৫৫ পয়সা দেখিয়ে শেয়ারবাজারে আসার আবেদন করে। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালে তালিকাভুক্তির পর থেকেই নিম্নমূখী হতে থাকে শেয়ারপ্রতি আয়। ২০১২ সালেই ইপিএস চার টাকা ৫৫ পয়সা থেকে নেমে আসে চার টাকা দুই পয়সায়। এরপর ২০১৩ সালে তা আরো কমে হয় তিন টাকা ৪৪ পয়সা। ২০১৪ সালে ইপিএস গিয়ে দাঁড়ায় তিন টাকা ২৭ পয়সায়। ২০১৫ সালে আরও কমে হয় দুই টাকা ৪০ পয়সা। আর গত ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন ২০১৬) হয়েছে এক টাকা ২১ পয়সা।
একইভাবে ব্যবসা মন্দা থাকায় কমছে মুনাফাও। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ছিল ১১৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ২০১৪ সালে তা নেমে আসে ১০১ কোটি টাকায়। ২০১৪ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৯৬ কোটি টাকায়। আর সর্বশেষ ৯ মাসের হিসাবে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ কোটি টাকায়।
সম্প্রতি কোম্পানিটি ১৮ মাসের জন্য ২২ শতাংশ বা প্রতিটি শেয়ারে দুই টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করে, যা মুনাফার চেয়ে কম। ইউনিক হোটেলের ২৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের বিপরীতে সাড়ে পাঁচ গুণের বেশি রিজার্ভ রয়েছে। কোম্পানিটির এক হাজার ৬৭০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার রিজার্ভ রয়েছে। তবে সর্বশেষ বছরে মুনাফার চেয়ে লভ্যাংশ কম ঘোষণা করায় এ রিজার্ভ আরও বাড়বে। ঘোষিত লভ্যাংশ ও অন্যান্য আলোচ্য বিষয় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ২২ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। আর কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার নির্বাচনের জন্য ১০ নভেম্বর রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাজার বিশ্লেষকরা বলেন, কোম্পানি প্রিমিয়াম পেতেই পারে। তবে সেটা কোম্পানির মৌলভিত্তির বিচারে হওয়া দরকার। কারণ দুর্বল কোম্পানি যদি পুঁজিবাজারে আসার সুযোগ পায়, তা বিনিয়োগকারী এবং বাজারে কারো জন্য ভালো হবে না। বিএসইসিকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এস/এমএ