সরকারী হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অধীন অগ্রণী ব্যাংক লিঃ এর হিসাবের ওপর আনা অডিট আপত্তি দ্রুত নিস্পত্তির পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আজ সংসদ ভবনে কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ পরামর্শ দেয়া হয়।
কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আমানউল্লাহ, মোঃ রুস্তম আলী ফরাজী, আ,ফ,ম, রুহুল হক, মোঃ শামসুল হক টুকু এবং রেবেকা মমিন সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (অগ্রণী ব্যাংক লিঃ) এর ২০১১-১২ অর্থ বছরের উপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট এর অডিট আপত্তির অনুচ্ছেদ ৯,১২,১৩,১৪,১৫,১৬,১৭,১৮,১৯ ও ২০ নিয়ে আলোচনা করা হয়। অডিট আপত্তিগুলো কমিটি থেকে দেয়া নির্দেশনার আলোকে নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়।
সভায় বলা হয়, চালু প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে টাকা আদায় না করায় শ্রেণীকৃত ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বাবদ ব্যাংকের ক্ষতি ৮ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ৩শ’ ৩০ টাকা ক্ষতি হয়, মর্মে উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে অনাদায়ী টাকা আদায় করার পরামর্শ দেয়া হয়। আদায়কৃত টাকার প্রমাণ জমাদান সাপেক্ষে আপত্তিটি অনধিক ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়।
সভায় বলা হয়, রপ্তানী ব্যর্থতায় সৃষ্ট ডিমান্ড লোনের টাকা পুনঃতফসিল সত্ত্বেও প্রকল্পের টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ চলতি মূলধন ঋণের টাকা তদারকির অভাবে আদায় না হওয়ায় ব্যাংকের ১৩ কোটি ১২ লাখ ২৭ হাজার ১শ’ ৯০ টাকা ক্ষতি হয়। এর ওপর উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে দায়েরকৃত মামলা নিবিড় তদারকি, দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক অনধিক ৯০ দিনের মধ্যে আপত্তিটি নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়।
সভায় বলা হয়, খুলনা মেটাল আন্ডাঃ লিঃ এর সিসি প্লেজ হিসেবে ডিপি ঘাটতি ২ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৬ শ’ ৬১ টাকা এবং সিসি, এলটআর হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বাবদ ১২ কোটি ৪০ লাখ ৮৮ হাজার ৩শ’ ৭৪ টাকা ক্ষতি হয়। এর ওপর উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে অনাদায়ী ঋণ আদায়ে গ্রাহকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ ঋণ বিতরণে অনিয়মের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের দায় দায়িত্ব নির্ধারণপূর্বক আপত্তিটি নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়।
সভায় বলা হয়, মেসার্স এম,আর,রাইস মিলস(প্রাঃ) লিঃ কে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ মঞ্জুরকরত ঋণগ্রহীতা কর্র্র্তৃক ঋণের অর্থ অন্যত্র স্থানান্তরপূর্বক খেলাপীতে পর্যবসিত হওয়ায় ৬ কোটি ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫শ’ ৭টাকা ক্ষতি হয়। এর ওপর উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে অনাদায়ী টাকা আদায় করে অগ্রগতি নিয়মিত অডিটকে জানানোর সুপারিশ করা হয়।
সভায় বলা হয়, অনিয়মিতভাবে প্রকল্পে ঋণ বিতরণ এবং খেলাপী হওয়ার দীর্ঘদিন পরও ঋণের অর্থ আদায় না হওয়ায় ব্যাংকের ১ কোটি ২ লাখ ৪ হাজার ৭শ’ ৪০ টাকা ক্ষতি হয়। এর ওপর উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে কমিটি ঋণ প্রদানের জন্য দায়দায়িত্ব নির্ধারণপূর্বক দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ, অনাদায়ী টাকা আদায় এবং মামলা নিবিড় তদারকির মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুপারিশ করে।
সভায় বলা হয়, মুন্সিপাড়া শাখার ঋণগ্রহীতা মেসার্স এম,আর, ফ্লাওয়ার মিলস (প্রাঃ) লিঃ কে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ মঞ্জুরকরত ঋণগ্রহীতা কর্র্র্তৃক ঋণের অর্থ অন্যত্র স্থানান্তরপূর্বক খেলাপীতে পর্যবসিত হওয়ায় ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার ৪শ’ টাকা ক্ষতি হয়। এর ওপর উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে অনাদায়ী টাকা আদায় করে অগ্রগতি নিয়মিত অডিটকে জানানোর সুপারিশ করে।
সভায় বলা হয়, মঞ্জুরী পত্রের শর্তানুযায়ী ঋণের টাকা সমন্বয় না হওয়ায় খেলাপী ঋণের সীমাতিরিক্ত দায়সহ মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বাবদ ৩ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার ১শ’ ১৮ টাকা ক্ষতি হয়। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা ও ঝুঁকি বিবেচনা না করে মেসার্স উত্তরা হিমঘর লিঃ এর জামানতে দ্বিতীয় চার্জের বিপরীতে সিসি(প্লেজ) ঋণ প্রদান করায় এবং প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্যোক্তা দেশান্তরী হওয়ায় ও প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে খেলাপী হওয়া সত্ত্বে ও আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ব্যাংকের ২ কোটি ৯৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯শ’ ৩৪ টাকা ক্ষতি হয়। এর ওপর উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে কমিটি আপত্তি দু’টি অডিট অফিসের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে নিষ্পত্তির সুপারিশ করে।
সিএন্ডএজি মাসুদ আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান, অগ্রণী ব্যাংক এবং জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এসটি