আবারো সক্রিয় শেয়ারবাজারে কারসাজি চক্র

syndikat-smbdনিজস্ব প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির তথ্য আগাম জেনে যাচ্ছেন শেয়ারবাজারের এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারী। এসব আগাম তথ্যের ভিত্তিতে তারা আগেই শেয়ার কিনছেন। পরে তথ্যটি বাজারে ছড়িয়ে মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। লাভ-ক্ষতি, বার্ষিক লভ্যাংশ ঘোষণা বা ভবিষ্যৎ ব্যবসা পরিকল্পনা-সংক্রান্ত এসব মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নিয়ে আবারো সক্রিয় শেয়ারবাজারে কারসাজি চক্র।

শেয়ারবাজারের এই অপতৎপরতা বছরের পর বছর নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের জানা থাকলে তারা নির্বিকার। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এটা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে ‘ওপেন সিক্রেট’ বিষয়। কোম্পানির ব্যবসায়িক সাফল্য বা ব্যর্থতা বাজারকে তেমন প্রভাবিত করে না বলে প্রচার করা হচ্ছে।

তবে কখনো কখনো কারসাজিমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোম্পানির উদ্যোক্তা, পরিচালক, শীর্ষ কর্মকর্তা, তাদের নিকটাত্মীয় এবং অডিটর জড়িত থাকে। তারপরও তা বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, কারসাজিমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে অনেক দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা ব্যবহার করে থাকে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠী কারসাজিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলেই ওই সংস্থা কমিশনের নজরে আনে। আমাদের কমিশনে এ ধরনের ব্যবস্থা নেই। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে শিগগিরই গোয়েন্দা দল নিয়োগ করা উচিত।

সাম্প্রতিক শেয়ারবাজারের লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একইচিত্র দেখা গেলো বীমা খাতের প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে। গত ২১ জুলাই বীমা কোম্পানিটির শেয়ার সর্বনিম্ন ৭৮ টাকায় কেনাবেচা হয়। মাত্র আট কার্যদিবসে শেয়ারটির দর বেড়েছে সাড়ে ৫২ শতাংশ। শেয়ারটির দর বেড়েছে লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। গত ২৯ জুলাই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৭ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

এ সভাটির খবর আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানিটি গত ২৬ জুলাই প্রকাশ করে। এর কয়েকদিন আগেই খবরটি শেয়ারবাজারে চলে আসে। এর ভিত্তিতেই শেয়ার কিনেছেন অনেকে। কেবল ইসলামী ব্যাংক বা প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স নিয়ে এমন দরবৃদ্ধির ঘটনাই প্রথম নয়। বরং প্রতি মাসেই বিভিন্ন কোম্পানির ক্ষেত্রে এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।

তবে কমিশনের দাবি, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নিয়ে কারসাজিমূলক লেনদেন প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। বিষয়টি কমিশনের জন্য উদ্বেগের। কমিশন চেষ্টা করছে নতুন সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যারে সকল ইনসাইডারের (যারা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য জানতে পারে) তথ্য সংযুক্ত করতে। এক্ষেত্রে প্রমাণযোগ্য তথ্য না পেলে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম/বি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *