এইমস ও গ্রামীণ ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের শুনানি ২৯ মার্চ

courtনিজস্ব প্রতিবেদক :

এইমস ও গ্রামীণ ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ড বন্ধ করতে বিএসইসির সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন গ্রহণ করেছে সর্বোচ্চ আদালত। এই রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিএসইসিকে আপিলের অনুমতি দিয়ে ২৯ মার্চ শুনানির দিন রেখেছে আপিল বিভাগ।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ স্থগিতাদেশ আদেশ দেয়।

বিএসইসির কৌসুঁলি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল বলেন, হাই কোর্টের ওই রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিএসইসিকে আপিলের অনুমতি দিয়ে ২৯ মার্চ শুনানির দিন রেখেছে আপিল বিভাগ ।

এর ফলে দশ বছর সময় বেঁধে দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড বন্ধ করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তা এইমস ওয়ান ও গ্রামীণ ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে বহাল থাকছে বলে জানান একরামুল হক।

২০১০ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক নির্বাহী আদেশে বলা হয়, ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ হবে দশ বছর এবং যেসব ফান্ডের মেয়াদ দশ বছর পেরিয়ে গেছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এই আদেশের পরও বিএসইসি একাধিকবার মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মেয়াদ বাড়ায়।

এর পর ২০১৪ সালের ২৫ ও ২৬ জুন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর বিধি ৫০ (খ) অনুযায়ী, এইমস ও গ্রামীণ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটহোল্ডারদের সভায় ফান্ড দুটির মেয়াদ সবোর্চ্চ অনুরূপ একটি মেয়াদের (১০ বছর) জন্য বর্ধিত করার পক্ষে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু ইউনিটহোল্ডারদের সিদ্ধান্ত নাকচ করে বিএসইসি আগের নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ২৯ জুন অনুষ্ঠিত এক সভায় ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধে্যে ফান্ড দুটির রূপান্তর/ অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেয়।

ওই নির্বাহী আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এইমস ওয়ান ও গ্রামীণ ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের অন্যতম ইউনিট হোল্ডার আলী জামান গত বছরের সেপ্টেম্বরে রিট আবেদন করে। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১৫ ডিসেম্বর হাই কোর্ট রায় দেয়।

রায়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তা এইমস ওয়ান ও গ্রামীণ ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

এতে স্থগিতাদেশ চেয়ে বিএসইসি চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন নিয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি এ বিষয়ে উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়ে আবেদন নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেয়।

বিএসইসি, ব্র্যাক ব্যাংক ও বাংলাদেশ জেনারেল ইনসুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিআইসি) করা তিনটি আবেদন ১৮ জানুয়ারি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে।

ওই দিন আপিল বিভাগ পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করতে বলে।

এ ছাড়া এইমস ওয়ান ও গ্রামীণ ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ড বন্ধ করার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণার হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিএসইসির করা লিভ টু আপিলে বিবাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করে দুটি ফান্ডের ইউনিটধারী ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। এসব আবেদন বৃহস্পতিবার তালিকায় ওঠে।

ব্র্যাক ব্যাংকের কৌসুঁলি এ এম আমিন উদ্দিনকে বলেন, আপিল বিভাগ বিএসইসি-এর লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেছে।এর সঙ্গে বাংলাদেশ জেনারেল ইনসুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও ব্র্যাক ব্যাংক যুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে লিভ টু আপিলে বিবাদী ও হাই কোর্টে রিট আবেদনকারীর সঙ্গে পক্ষভুক্ত হয়েছে ক্ষুদ্র বিনোয়াগকারীরা।

আদালতে বিএসইসির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল একরামুল হক টুটুল, বিজিআইসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম. কামরুল হক সিদ্দিকী এবং ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন।

হাই কোর্টে রিট আবেদনকারী আলী জামানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এইমস ওয়ানের ও গ্রামীণের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *