কারসাজি চক্রের টার্গেট নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি

ipoনিজস্ব প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারে নতুন আসা কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি থামছেই না। একটির পর একটি আইপিওর মাধ্যমে আসা নতুন কোম্পানি বেছে নিচ্ছে তারা। মৌলভিত্তি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম। চক্রটির সর্বশেষ শিকারে হলো গত মঙ্গলবার লেনদেনে আসা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ কোম্পানি।

লেনদেনের প্রথম দিনেই মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬৬০ শতাংশ বা ৬৬ টাকা। পোস্ট আইপিও শেয়ারের আলোকে সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ১ টাকা ১৭ পয়সা। এ হিসেবে শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ৭৫। এটি অনেক বিপজ্জনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তাদের আশঙ্কা, কারসাজিকারীদের পাতা ফাঁদে পা দিলেই বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তারা বলছেন, লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই মার্জিন সুবিধা, সার্কিট ব্রেকার না থাকা, তালিকাভুক্ত নতুন কোম্পানির শেয়ারে ধারাবাহিকভাবে দাম বাড়া, কারসাজি ও বিনিয়োগকারীরা না বুঝে নতুন শেয়ারে বিনিয়োগ করার কাণে নতুন কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ে বলে মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে সিটিজেন সিকিউরিটিজ এন্ড ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাহিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, নতুন কোম্পানি বাজারে আসলেই হু হু করে দাম বাড়ে। ফলে বিনিয়োগকারীরা কিছু না বুঝেই সে শেয়ারে বিনিয়োগ করে। এতে করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের উচিত ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা। যাতে করে তারা দীর্ঘমেয়াদে ভালো কিছু পায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এক সময় নতুন কোম্পানির শেয়ারে কোনো মার্জিন ছিল না। এখন বিএসইসি আবার প্রথম দিন থেকেই মার্জিনের ব্যবস্থা করে রেখেছে। এতে করে মার্জিন নিয়ে তারা নতুন কোম্পানির শেয়ারের দিকে ঝুঁকে পড়ে। বিএসইসির উচিত মার্চেন্ট ব্যাংক বা ট্রেকহোল্ডারদের বলে দেয়া, যাতে তারা নতুন কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ না দেয়।

প্রথম দিনেই খান ব্রার্দাসের শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়েছে। শেয়ার কম হওয়ার ফলে এ ঘটনা ঘটছে। যদি কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৭৮ টাকা হওয়ার মতো হলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি) তাদের প্রিমিয়াম দিয়ে বাজারে নিয়ে আসতো। এটি প্রিমিয়াম পাওয়ার যোগ্য না বলেই তাদের ফেইস ভ্যালুতে বাজারে এসেছে।

এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু আহমেদ বলেন, প্রথম দিন লেনদেনে আসা নতুন কোম্পানিগুলোতে কারসাজি হয় এবং এ কারণে কিছু বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন। আর বর্তমান আইপিও বাজারের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে শুরু থেকেই সার্কিট ব্রেকার রাখা জরুরি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এইচ/এলকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *