শেয়ারবাজারে তালিকাবুক্ত প্রিমিয়ার ব্যাংক আর্থিক প্রতিবেদনে কাড়সাজি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ বিতরণ করেছে। ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আমানতের নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) অর্থ মুনাফা হিসেবে দেখিয়ে লভ্যাংশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ব্যাংকের দুই বছরের নিরীক্ষিত ব্যালেন্স শিট বা স্থিতিপত্র ও অর্ধবার্ষিক আর্থিক হিসাব প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এ তথ্য মিলেছে।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, ২০১২ সালে তাদের হাতে থাকা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) প্রয়োজন ছিল ৩৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। কিন্তু ব্যাংক মাত্র আট কোটি তিন লাখ সংরক্ষণ করে। বাংলাদেশ ব্যাংক হিসাবটি ধরে। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশ দেয় ৩১ কোটি ২৫ লাখ টাকা নতুন করে সংরক্ষণ করতে হবে।
কিন্তু ২০১৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন তথ্যে এই প্রভিশনের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ ব্যাংকের হাতে থাকা শেয়ারও বিক্রি করা হয়নি।
অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) আবু হানিফ খান জানান, তাদের মোট ১২৮ কোটি টাকার প্রভিশন এ বছরের মধ্যে সমন্বয় করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ সময় দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে তারা ২০ কোটি টাকা সংরক্ষণ করেছেন, ১৫ কোটি টাকা মার্চে সংরক্ষণ করেছেন, জুনে করেছেন ৩৫ কোটি টাকা, বাকি অর্থ সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সংরক্ষণ করবেন।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এম মাজেদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শেয়ারবাজার বিবেচনায় তাদেরকে কিছু করতে হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে তাদের কিছু ভুল হয়েছিল। নিয়ম অনুসারে পরে তা ঠিক করে জুনের আর্থিক হিসাবে প্রকাশ করা হয়। ২০১৩-তে এসে আরও কিছু প্রভিশনের পরিমাণ বেড়েছে। সব নিয়ে সেপ্টেম্বরভিত্তিক নিয়মমাফিক প্রভিশন সংরক্ষণ করা হবে।
২০১৩ সালে ব্যাংকটি ১০ শতাংশ হারে স্টক বা বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করে ইতিমধ্যেই তা বিতরণ করে দিয়েছে। নিয়ম অনুসারে, ৩৯ কোটি টাকার প্রভিশন রাখলে গত বছর ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারত না। আর সেটা না পারলে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তির বিধিমালা অনুসারে ব্যাংকটির শেয়ার ‘বি’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে আসত।
উল্লেখ্য, প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান হচ্ছেন এইচ বি এম ইকবাল; যিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন সাবেক সাংসদ।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/সি