সাবসিডিয়ারিতে ৫০%র বেশি পরিচালক থাকলে ব্যবস্থা নিবে বিএসইসি

bsecনিজস্ব প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট সহযোগী প্রতিষ্ঠানে মূল কোম্পানি থেকে ৫০ শতাংশের বেশি পরিচালক থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য ব্যাংক-বিমা ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে তাদের পর্ষদের হালনাগাদ তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। চিঠিতে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে হোল্ডিং ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ-সম্পর্কিত সব তথ্য বিএসইসিতে জমা দিতে বলা হয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, নির্দেশনার দুই বছর অতিক্রম করলেও কিছু প্রতিষ্ঠান তা বাস্তবায়ন না করায় তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এ লক্ষ্যে ২৮টি মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ব্রোকারসহ ৬৩টি প্রতিষ্ঠানকে তাদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্যারেন্ট ও সাবসিডিয়ারি উভয় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ-সম্পর্কিত সব তথ্য বিএসইসিতে জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীন কার্যক্রম নিশ্চিত করতে তাদের পর্ষদে মূল প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব কমানোর উদ্যোগ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ লক্ষ্যে কমিশনের আইন সংশোধন করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া হয়। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান এখনো তা পরিপালন না করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এখনো নির্দেশনা পরিপালন করেনি, তথ্য পাওয়ার পর তাদের আবারো সময় বেঁধে দেয়া হবে। এর পরও কেউ না পারলে তাদের জরিমানা, নিবন্ধন বাতিলসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারিগুলোর স্বাধীন কার্যক্রম নিশ্চিত করা ও মূল প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে ২০১০ সালে সাবসিডিয়ারির পর্ষদে হোল্ডিং কোম্পানির প্রভাব নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে বছরের ১৫ জুন এ জন্য একটি নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিওএস সার্কুলার নং ৪-এ শেয়ারবাজারে মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও ব্রোকারেজ কার্যক্রমকে ব্যাংক থেকে সম্পূর্ণ পৃথক করার নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই নির্দেশনার আলোকে ২০১২ সালের মার্চে সাবসিডিয়ারিতে মূল প্রতিষ্ঠানের পরিচালক-সংক্রান্ত সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-২০০০ সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিএসইসি। এতে সাবসিডিয়ারির পর্ষদে মূল প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ শতাংশের বেশি পরিচালক থাকলে তাদের নিবন্ধন আবেদন নামঞ্জুরের কথা বলা হয়, যা ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ থেকে বাস্তবায়ন করার কথা।

২০১২ সালের ১১ মার্চ সাবসিডিয়ারিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ গঠন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বিএসইসি বলে, কোনো সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে উদ্যোক্তা কোম্পানির মনোনীত সদস্যের সংখ্যা যদি ৫০ শতাংশের বেশি হয়, তবে সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট সেবার নিবন্ধন সার্টিফিকেটের আবেদন নামঞ্জুর হবে। এ বিষয়ে ২০১৩ সালে নির্দেশনা জারি করা হলেও অনেক সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান তা মেনে চলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিএসইসির এ নির্দেশনার পর নতুন মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ব্রোকারগুলো আইন মেনে মূল প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশের কম পরিচালক নিয়েই নিবন্ধন নিয়েছে। আর নির্দেশনার আগে নিবন্ধন নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২০১৩ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে তা পরিপালনে চিঠি দেয় কমিশন।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ/এলকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *