অবসায়নকৃত মিউচুয়াল ফান্ডে বঞ্চিত বিনিয়োগকারীরা

mutualনিজস্ব প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পুরো অর্থ ফেরত দেওয়া নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মধ্যে রশি টানাটানি চলছে। এ কারণে মোট ৩৩৬ কোটি টাকার এইমস প্রথম ও গ্রামীণ ওয়ান স্কিম-১ মিউচুয়াল ফান্ড অবসায়ন হলেও বিনিয়োগকারীরা বঞ্চিত হচ্ছে। এখনও প্রায় ৩১ কোটি টাকা ফেরত পাননি সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা।

এনবিআরের দাবি, অবসায়নের পর এ দুটি ফান্ডের সম্পদ মূল্যের পুরোটাই ‘লভ্যাংশ আয়’, যা থেকে উৎসে কর আদায় করতে হবে। তবে বিএসইসি এর বিপরীত ব্যাখ্যা দেওয়ায় ফান্ড দুটির ট্রাস্টি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ও বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ করেনি।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বলছে, এর আগে বিএসআরএস প্রথম নামের একটি মিউচুয়াল ফান্ড অবসায়িত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এনবিআর কর আদায় করেনি। এবার নিয়মবহির্ভূতভাবে কর দাবি করা হচ্ছে। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে বলেও মনে করছেন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো ফান্ডের সম্পদ মূল্য লভ্যাংশ আয় নয়। তাই উৎসে কর কাটার কোনো সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কর কমিশনার সনজিত কুমার বিশ্বাস সমকালকে জানান, বিএসইসির আপত্তির বিষয়টি এনবিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই এর সুরাহা হবে। এর থেকে বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ জানান, কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড এক নয়। অবসায়িত ফান্ড থেকে প্রাপ্য অর্থকে লভ্যাংশ হিসেবে গণ্য করতে এনবিআরের দুই কর অফিসের নির্দেশনার মধ্যে অস্পষ্টতা আছে। এ ছাড়া বিএসইসির যুক্তিগুলো আমলেও নেওয়ার মতো। তাই এনবিআরের কর দাবি আরও বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে।

বিএসইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, একটি মহল বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার তথা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট শাখাকে ভুল বুঝিয়ে কর আদায়ের চিঠি ইস্যু করিয়েছে।

এর আগে ফান্ড দুটির সম্পদ ব্যবস্থাপক এইমস বাংলাদেশের দিকে ইঙ্গিত করে বিএসইসির এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি অবসায়িত ফান্ডগুলোর যাবতীয় সম্পদ ট্রাস্টির কাছে হস্তান্তর করেছে এবং এ সম্পদের ওপর তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট পক্ষ বা ব্যক্তি শুধু বিনিয়োগকারীদের অর্থপ্রাপ্তিতে বিলম্ব ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) ও কর কমিশনার অফিস-কোম্পানি সার্কেল থেকে পৃথক দুটি চিঠিতে অবসায়িত দুই মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থকে লভ্যাংশ আয় হিসেবে গণ্য করে উৎসে কর কর্তনের জন্য ট্রাস্টিদ্বয়কে নির্দেশ দেয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ফান্ড দুটির ট্রাস্টি যথাক্রমে বিজিআইসি ও গ্রামীণ ফান্ড নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশনা চায়। এ অবস্থায় এনবিআরের দাবি করা টাকা কর্তন করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তবে তা কমিশনের পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়ার আগ পর্যন্ত এনবিআরের কাছে হস্তান্তর না করারও নির্দেশনা দিয়েছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *