অর্থ পাচার রোধে দ্বৈত নাগরিকদের তালিকা চায় হাইকোর্ট

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

অর্থ পাচার ও দুর্নীতির মাধ্যমে যারা বিদেশে বাড়ি নির্মাণ করেছে অথবা কিনেছে, সেই বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট আছে এবং যারা দেশের বিমানবন্দরগুলো দিয়ে দেশে-বিদেশে নির্বঘ্নে আসা-যাওয়া করছে, তাদের তালিকা চেয়েছে হাই কোর্ট।

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পুলিশের বিশেষ শাখার সুপারকে (ইমিগ্রেশন) এ তালিকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারকারীদের নাম, ঠিকানাসহ অর্থ পাচারের যাবতীয় তথ্য জানতে চাওয়ার ধারাবাহিকতায় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

আদেশে বিশেষ শাখার সুপারকে (ইমিগ্রেশন) এ মামলায় ১১ নম্বর বিবাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত করেছে আদালত। এদিন দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের আইনজীবী এদিন আদালতে দ্বৈত নাগরিক ও দ্বৈত পাসপোর্টধারীদের তালিকা চাওয়ার নির্দেশ দিতে আরজি জানায়।

তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “দ্বৈত নাগরিক ও পাসপোর্টধারী কারা, সেটা আমরাও জানতে চাই। দ্বৈত পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাতায়াতকারীদের তথ্য জানা প্রয়োজন।”

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, “অর্থপাচার সংক্রান্ত মামলায় মাননীয় বিচারপতি বিশেষ শাখার পুলিশ সুপারকে (ইমিগ্রেশন) পক্ষ করেছেন।

“এছাড়া ঢাকা চট্ট্রগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে যারা আসা যাওয়া করে, তাদের তালিকা চেয়েছে। এই তালিকাটি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাই কোর্টে দাখিল করার জন্য পুলিশের বিশেষ শাখার সুপারকে একটা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

গত ১৮ নভেম্বর ডিআরইউর মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান। প্রাথমিকভাবে অর্থপাচারে জড়িত যাদের তথ্য পাওয়া গেছে তার মধ্যে সরকারি কর্মচারীই বেশি বলে জানান তিনি। এছাড়া রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীও রয়েছেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেলেন। তবে সেদিন কারও নাম তিনি প্রকাশ করেননি।

সে বক্তব্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাঙালি অধ্যুষিত কানাডার কথিত ‘বেগম পাড়ার’ প্রসঙ্গ উঠে আসে। সেসব প্রতিবেদন নজরে আসার পর গত ২২ নভেম্বর হাই কোর্ট অর্থপাচারকারী, দুর্বৃত্তদের নাম-ঠিকানার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, তা জানতে চায়।

স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইনানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়।

এছাড়া প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে অর্থপাচারকারী সরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, ব্যাংক কর্মকর্তা ও অন্যদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। নির্দেশ অনুযায়ী গত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

এসব প্রতিবেদনের উপর শুনানির পর আদালত আবার অর্থ পাচারকারীদের নাম ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য চেয়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী তারিখ রেখেছে। ওই সময়ের মধ্যে বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *