ঋণের ব্যাপারে শর্ত দেয়নি আইএমএফ

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেছেন, সংস্থাটি ঋণের ব্যাপারে কোনো শর্ত দেয়নি। তবে আর্থিক খাতের সংস্কার, নীতি ও ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একেক জায়গায় ডলারের একেক রকম বিনিময় হার প্রসঙ্গেও কথা হয়েছে।

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের হিসাব পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। মিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি জানান, আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি, র‍্যাপিড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ও র‍্যাপিড ফাইন্যান্সিং ইনস্ট্রুমেন্ট চুক্তি আছে। চুক্তির আওতায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিশ্চিত হওয়া যাবে। নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আইএমএফ মিশন এখন বাংলাদেশ সফর করছে। এদিন বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈঠক হয়েছে তিনটি। আরো তিনটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী ৩০ ও ৩১ অক্টোবর এবং ২ ও ৮ নভেম্বর আবার বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।

আইএমএফের ব্যালান্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম-৬) ম্যানুয়াল অনুযায়ী, কোনো দায় রিজার্ভ হিসেবে বিবেচিত হবে না। বিশেষ করে রিজার্ভের অর্থে গঠিত ইডিএফসহ বিভিন্ন ঋণ তহবিল, যেগুলো নন-লিকুইড সম্পদ, সেটি রিজার্ভ থেকে বাদ দিয়ে হিসাব করার কথা বলে আসছে আইএমএফ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেদের মতো করে এ হিসাব করছে; যাতে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ (ইডিএফ) আরো কয়েকটি তহবিলে জোগান দেওয়া অর্থও অন্তর্ভুক্ত করে রাখছে।

আইএমএফ যেকোনো দেশের রিজার্ভ হিসাবের বেলায় বিপিএম ৬ (ব্যালান্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে। এতে রিজার্ভের প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য তহবিলই প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে হিসাব করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত রিজার্ভের চেয়ে তা অনেক কম হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত ইডিএফে সরবরাহ করা হয়েছে প্রায় ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ বিমান, পায়রা সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এ জন্য মোট দেওয়া হয়েছে প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফর হিসাবে এই পরিমাণ অর্থ রিজার্ভের হিসাবে থাকার কথা নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বুধবার পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ হচ্ছে ৩৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব মানলে এ থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের মতো।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রিজার্ভের হিসাব পদ্ধতি নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচনা ফলপ্রসূ হচ্ছে, তা সন্তোষজনকভাবে চলছে।

বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় জুলাইয়ে ঋণ চেয়ে আইএমএফকে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ।

স্টকমার্কেটবিডি.কম////

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *