ঋণ খেলাপির কারণে সংসদে আমাকে গালি শুনতে হয় : অর্থমন্ত্রী

kamalস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

আমিও একজন ব্যবসায়ী। কিন্তু আমি ঋণখেলাপি নই। আপনাদের বিতরণকৃত ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার কারণে সংসদে আমাকে গালি শুনতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজারদের বার্ষিক কনফারেন্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দিয়ে চলছে। কমেছে দেশেরই আমদানি-রফতানি। এই পরিস্থিতিতে ভালো করা খুব কঠিন। তবে যে চ্যালেঞ্জগুলো সামনে আসবে সেগুলোকে শক্তিতে রূপান্তরিত করার পরামর্শ দেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, একটি ব্যাংকের সব মানুষ খারাপ নয়। দুই একজন খারাপ। সর্বোচ্চ পর্যায় বা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে শাস্তি আসার আগেই নিজেদের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান করে নিন। খারাপ কর্মকর্তাদের জন্য যখন ঋণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন পুরো ব্যাংককেই এর ভুক্তভোগী হতে হয়। আর আমাকে আপনাদের জন্য সংসদে গালি শুনতে হয়।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, শিল্পখাতে অবদান রাখার জন্য আপনাদের এই ব্যাংকটির সৃষ্টি। শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য আপনারা জাতির কাছে দায়বদ্ধ। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, মালিকানা ও দেখাশোনাসহ সব কিছুর দায়িত্ব আপনাদের।

সকলের অবদানের উপর ভিত্তি করেই আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২০ অর্থনীতির দেশের মধ্যে প্রবেশ করব। এই মুহূর্তে আমরা ৩৯তম স্থানে অবস্থান করছি। ২০২৭ সালের মধ্যে ২৪তম স্থানে পৌঁছবো। সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হতে চাই, যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বিতরণকৃত ঋণ যেন খেলাপিতে পরিণত না হয় সেজন্য গুণগত ঋণ বিতরণ করুন। বর্তমানে বিডিবিএলের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৮ শতাংশ, যা মোটেও কাম্য নয়। আগামী বছরে ২০ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার চেষ্টা করবেন। এই মুহূর্তে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি খুবই কম। তবে এপ্রিল মাসে সকল প্রকার ঋণে সুদহার ৯ শতাংশে নেমে আসলে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে জানান গভর্নর।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিডিবিএল চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, আমাদের অতীত ইতিহাস সুখকর নয়। তবে আমরা সামনে তাকাতে চাই। ২০১৯ সালে পরিচালন মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি টাকা। আগের বছরের (২০১৮) পরিচালন মুনাফা ছিল ১১৭ কোটি টাকা। তিনি আরও জানান, আমরা পুরনো গ্রাহকদের ফিরিয়ে আনতে চাই। এই মুহূর্তে আমাদের ব্যাংকের মূল সমস্যা উচ্চ খেলাপি ঋণ। পাশাপাশি রয়েছে দক্ষ জনবলের অভাব।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কাজী আলমগীর বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের ব্যাংকের মোট শাখা ৪৬টি। ২০২২ সালের মধ্যে আরও ২০টি শাখা খোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম বুথ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করার চিন্তা করছি আমরা। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে নতুন করে ঋণখেলাপি তৈরি হতে দেওয়া হবে না।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/আর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *