স্টকমার্কেটবিডি ডেস্ক :
কেডিএস গ্রুপ কর্তৃপক্ষ তাদের কোম্পানির সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছে। বর্তমানে ওই কর্মকর্তা জেলে আছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সংসদীয় কমিটি অভিযোগটি খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০০৭ সালে কেডিএস গ্রুপ মনির হোসেন খানকে কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করে। নিয়োগের পর তিনি কৌশলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এজন্য বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা করেছে কেডিএস গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কেওয়াই স্টিল মিলস কোম্পানি। ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ২২২ থেকে ২৩৪ ধারা অনুসারে মামলাগুলো করা হয়েছে। তবে মামলা হলেও এখনও টাকা ফেরত পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য সংসদীয় কমিটির সাহায্য চাওয়া হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মনির হোসেন খান ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কোম্পানির মালিকদের সব সময় সাফল্যের কথা বলতেন। অপরদিকে ৩০০ কোটি টাকা দায় থেকে হাজার কোটি টাকায় নিয়ে গেছেন। অসঙ্গতি টের পাওয়ায় তাকে ২০১৮ সালে বরখাস্ত করা হয়। ওই সময় তিনি অঙ্গীকার করে জানান, কোম্পানি যখন তাকে ডাকবে, তিনি তখন এসে হিসাব-নিকাশ বুঝিয়ে দেবেন। কিন্তু বারবার ডাকা সত্ত্বেও তিনি আসেননি। এরপর তিনি সব গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেন।
জানা যায়, মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে এইচআর কয়েল আমদানিতে দুর্নীতি ও বন্ধুদের নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ। অথচ তার ভ্রমণের সঙ্গে কোম্পানির কোনো ব্যবসা ছিল না। তার সব ভ্রমণ টিকিটের বিপক্ষে হাতের লেখা চেক আছে। এ ছাড়াও তিনি তার নিজস্ব ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিকে দিয়ে মূল্য পরিশোধ করিয়েছেন। ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট থেকে দেখা যায়, বড় বড় শপিং মল থেকে তিনি তার স্ত্রীর জন্য শাড়ি, গহনা, কসমেটিক ইত্যাদি কিনেছেন। মনির হোসেন খানের দুটি পাসপোর্ট রয়েছে। একটি বাংলাদেশি এবং একটি আমেরিকান, যা আমেরিকান ইমিগ্রেশন আইনের পরিপন্থী। কারণ আমেরিকান ও বাংলাদেশের মধ্যে ডুয়েল সিটিজেনশিপের চুক্তি নেই। মনির হোসেন খান চাকরিরত থাকাবস্থায় গোপন চুক্তির মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল প্লাটসের মূল্য প্রতি টনে ৪০ থেকে ৫০ ডলার বেশি দেখিয়ে অনেক অবৈধ কমিশন নিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এইচআর কয়েলের বাজারে মূল্য ধারণ করে যুক্তরাজ্যের প্লাটস নামের একটি সংগঠন।
কেওয়াই স্টিলের সিইও জাবির হোসেন অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, মনির হোসেন খান আমেরিকায় আইএনজে ভেঞ্চারের নামে অ্যাপার্টমেন্ট, মিয়ামিতে ভিলা ও জমি কিনেছেন। এমনকি হোটেল ব্যবসায় বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এমন চিঠিও আমাদের কাছে আছে। সেখানে ফ্ল্যাট-জমি কেনার নথিপত্রে তিনি বলেছেন আমেরিকায় তার আয়ের কোনো উৎস নেই। মেরিনার্স ট্রান্সপোর্ট লি. নামে যে প্রতিষ্ঠান তার বাবা-ভাই মিলে করেছেন, সেটাকে কেওয়াই স্টিলের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান দাবি করে এর মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে চিঠিও দিয়েছেন। সংসদীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান জানান, কেডিএস গ্রুপের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। কমিটির আগামী বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করা হবে। এরপর বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য প্রয়োজনে সাব-কমিটি গঠন করা হবে। সূত্র : যুগান্তর
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম