গ্যাসের দাম বাড়লে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো ব্যাহত হবে : শিল্পোদ্যোক্তরা

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

সম্প্রতি গ্যাসের দাম বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে প্রস্তাব জমা দেওয়া শুরু করেছে গ্যাস সঞ্চালন, উৎপাদন ও বিতরণ কম্পানিগুলো। কিন্তু দাম বাড়ানোর উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন দেশের শিল্পোদ্যোক্তরা। তাঁরা বলছেন, গ্যাসের দাম বাড়লে উৎপাদন খরচও বাড়বে। যা শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমিয়ে দেবে। মহামারিকালীন অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো ব্যাহত হবে।

আজ বুধবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পাওয়ার, এনার্জি, ইউটিলিস বিষয়ক এফবিসিসিআইয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চীন ও ভারত আরো ২০ বছর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখবে। বাংলাদেশেও শিল্পের বিকাশের স্বার্থে দেশে মজুদ থাকা কয়লার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত সরকারের। গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। তিনি বলেন, বাপেক্স একা না পারলে বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথ অংশীদারত্বে অনুসন্ধান কূপ খননে গতি আনা উচিত।

স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবুল কাশেম খান বলেন, দেশে জ্বালানি খাতে আমদানিনির্ভরতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ নয়। দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও শিল্পায়ন অব্যাহত রাখতে দেশীয় সম্পদকে কাজে লাগানো জরুরি। কয়লা উত্তোলন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে মত দেন আবুল কাশেম খান।

এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মো. নাসের বলেন, বিতরণ ব্যবস্থায় চরম অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুফল বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে বিতরণ কম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনার ভার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সাংবাদিক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য সরকারের অন্তত আরো ১০০টি কূপ খনন করা উচিত। এ ছাড়াও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো পুরোপুরি প্রস্তত না হওয়া পর্যন্ত বাইরের শিল্পকারখানাগুলোকে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন জ্বালানি বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’-এর সম্পাদক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন।

সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে ওয়ান স্টপ সলিউশন, চরের অনাবাদি জমিতে সোলার প্যালেন স্থাপন, সরকারিভাবে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া, বর্জ্য ও চালের কুড়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প হাতে নেওয়ার দাবি জানান কমিটির সদস্যরা।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের এমডি ও সিইও হুমায়ুন রশিদ। তিনি বলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেশীয় ও বিদেশি উৎসের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করা না গেলে দেশের জ্বালানি খাতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দীন ইউসুফ, মোহাম্মদ আলী দ্বীন, নাজমুল হক ও এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজল হক।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *