স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান কিংবা নীতিনির্ধারণী ভূমিকায় থাকা পরিচালকরা একই ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি বা সহযোগী প্রতিষ্ঠানেরও নীতিনির্ধারণী পদে থাকছেন। কেউ কেউ পৃথক কোম্পানি গঠন করে সে কোম্পানির মাধ্যমে নিজ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসাও করছেন। ফলে ভেঙে পড়ছে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও সুশাসন। এ অবস্থায় ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ নীতিনির্ধারণী ভূমিকায় থাকা ব্যক্তিদের সাবসিডিয়ারি বা সহযোগী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালক কিংবা সদস্য পদে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ থেকে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বিভাগটির মহাব্যবস্থাপক মো. আলী আকবর ফরাজী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের কপি দেশের সবক’টি তফসিলি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোনো ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পর্ষদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত পর্ষদের সহায়ক কমিটি যথা নির্বাহী কমিটি, অডিট কমিটি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি ওই ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বা ব্যাংকের অর্থায়নে গঠিত ও পরিচালিত কোনো কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান বা ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদ বা গভর্নিং বডি, যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, এর চেয়ারম্যান, পরিচালক কিংবা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।
ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী পদে দায়িত্ব পালনরত এ ধরনের কোনো ব্যক্তি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের পদে থাকলে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগের বিষয়টি জুলাইয়ের প্রথম সাত কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা মনোনীত কিংবা প্রতিনিধি পরিচালক বা স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে ন্যূনতম এক বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করলে ওই মেয়াদপূর্তি বা অবসর বা অব্যাহতির পর ওই ব্যক্তি কখনই ওই ব্যাংকের নিয়মিত বা চুক্তিভিত্তিক কোনো পদে নিয়োগ বা নিযুক্ত হতে পারবেন না। ব্যাংকের কোনো পদে এরই মধ্যে কোনো নিয়োগ দেয়া হলে তাকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। এ ধরনের পদত্যাগের বিষয়টিও জুলাইয়ের প্রথম সাত কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, প্রজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু ব্যাংকের পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্দেশনাটি জারি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংকের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় স্বার্থের সংঘাত পরিহার এবং নিরপেক্ষতা, পেশাগত মান ও সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৩(১)(ক) ধারায় কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যাংকের পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বীমা কোম্পানির পরিচালক থাকবেন না মর্মে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে ব্যাংক পরিচালনায় শৃঙ্খলা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ২০২১ সালের ১২ মে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/