টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য কয়লাভিত্তিক উৎপাদনে যেতে হবে : আইসিবিবি

iccস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

টেকসই এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য জরুরি। বাংলাদেশে পার ক্যাপিটা বিদ্যুতের ব্যবহার ৪৩৩ কিলোওয়াট, এই হার বিশ্বের সর্বনি¤œ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার বিকল্প নেই। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যকর এবং সাশ্রয়ী হবে, এর জন্য আমদানিকৃত কয়লার পরিবর্তে স্থানীয় উচ্চমান সম্পন্ন কয়লা জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার উপযুক্ত হবে।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি) তার নিউজ বুলেটিন সম্পাদকীয়তে এই অভিমত তুলে ধরেছে। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলছে,বিদ্যুৎ খাতকে অর্থনীতির মেরুদন্ড হিসেবে টেকসই এবং উজ্জীবিত করতে হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোতভাবে কয়লার বাণিজ্যিক অনুসন্ধানে যেতে হবে।

সংগঠনটি আরো বলছে- বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি কয়লাক্ষেত্রে ৩ বিলিয়ন টন উন্নত মানের কয়লা মজুত থাকা সত্ত্বেও সরকার কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষজ্ঞ এবং এনার্জি বিষয়ক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের জন্য সমর্থন দিয়েছে, যেহেতু এ প্রক্রিয়ায় ঝুঁকি কম এবং খরচ কম। কিন্তু এ পদ্ধতির বিরোধিতাকারীদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার কারনে সরকার এ ব্যাপারে অগ্রসর হচ্ছেনা।

আইসিবিবির মতে- প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে এবং স্থানীয় কয়লা উত্তলনে বড় ধরনের কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় টেকসই স্থানীয় প্রাথমিক এনার্জির উৎসে পৌঁছানো ক্রমেই দুরূহ হয়ে যাচ্ছে। প্রাক্কলন অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে আমদানিকৃত জ্বালানীর উপর ৯২ শতাংশ নির্ভরশীল হয়ে পড়বে যদি স্থানীয় কয়লা অনুসন্ধান করা না যায় এবং কাজে লাগানো না যায়।

সরকারের সহায়ক নীতির কারণে বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা বেড়েছে উল্লেখ করে সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে-১৯৭২ সালে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ স্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়।বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াট,এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে ৬০০ মেগাওয়াট।

সরকারের নীতি-সহায়তার কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ এবং স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট বিদ্যুতের ৪৬ শতাংশ স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা উৎপাদন করছে। যদিও সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সফলতা এনেছে কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ পদ্ধতি দুর্বল হওয়ায় এবং দুই অংকের সিস্টেম লসের কারণে মাত্র ৯ হাজার ৫০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে।

পাশাপাশি লোড শেডিং ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার জন্য শিল্প উৎপাদন এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে লোড শেডিডংয়ের ফলে শিল্প খাতে বছরে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হচ্ছে এবং এ কারনে জিডিপির প্রবৃদ্ধি শুণ্য দশমিক ৫ শতাংশ কম হচ্ছে। এটা অনুমান করা হয় যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়,যার বাৎসরিক মূল্য ২৪৭ মিলিয়ন ডলারের সমতুল্য। সুতরাং, উপযুক্ত অবকাঠামো এবং কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *