করোনার অর্থনৈতিক ক্ষতি পোষাতে ক্ষতিকর তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ করার দাবি জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ করা হলে প্রায় ২০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত হবে।
আর সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ আগামী অর্থবছরে চার হাজার ১০০ কোটি থেকে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বেশি রাজস্ব আয় হবে।
বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা), বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) যৌথভাবে ওই সেমিনারের আয়োজন করে বলে আজ সোমবার (১১ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
‘তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক ওই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।
আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলমের সঞ্চালনায় ওই আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রানা মোহাম্মদ সোহেল, মো. নুরুল ইসলাম তালুকদার, অধ্যাপক মাসুদা এম. রশীদ চৌধুরী ও নাজমা আকতার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসিরুদ্দীন আহমেদ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী খায়রুল আলম সেখ, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দীন আহমেদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. সৈয়দ মাহফুজুল হক, সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম তামাক ব্যবসাবান্ধব দেশ। এ পরিস্থিতি বজায় থাকলে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ফলে আসন্ন বাজেটে সব ধরনের তামাক পণ্যে বহু স্তরভিত্তিক কর পদ্ধতি বাদ দিয়ে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। এতে সরকার বাড়তি রাজস্ব পাবে এবং তরুণদেরও তামাক পণ্য থেকে দূরে রাখা যাবে। পাশাপাশি একটি গহণযোগ্য কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য একটি যুগোপযোগী তামাক-কর নীতি প্রণয়ন করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, এনবিআর প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থে তামাকজাত দ্রব্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের কথা বলা হয়েছে। ফলে সিগারেটে সুনির্দিষ্ট করারোপে কোনো অসঙ্গতি বা জটিলতা নেই। এতে ত্রুটিপূর্ণ কর ব্যবস্থার কারণে প্রতিবছর তামাক কম্পানির ক্রমবর্ধমান মুনাফা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বক্তারা ধোঁয়াবিহীন তামাকের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, জর্দা, গুল, সাদাপাতা উৎপাদনকারী অধিকাংশ কম্পানির তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে নেই। ফলে তারা কর আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজম্ব হারাচ্ছে।
সেমিনারে সংসদ সদস্যরা একটি সময়োপযোগী তামাক-কর ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দ্রিষ্ট কর আরোপের পক্ষে নিজেদের অবস্থান থেকে সোচ্চার থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/