শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি পরপর দুই বছর নগদ লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হলে সেটি জেড (জাঙ্ক) ক্যাটাগরিভুক্ত হবে। এ ছাড়া ছয় মাস বন্ধ, টানা দুই বছর লোকসান করলে কিংবা পুঞ্জীভূত লোকসান মূলধনকে ছাড়িয়ে গেলেও ওই কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে যাবে। এদিকে এমন শেয়ার কেনাবেচার নিষ্পত্তির সময় বর্তমানের ৯ কার্যদিবসের (টি+৮) পরিবর্তে চার কার্যদিবসে (টি+৩) নামিয়ে আনাসহ জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির বিষয়ে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি গতকাল বৃহস্পতিবার নিয়মিত কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে তালিকাভুক্তির পর যেসব কোম্পানি বছরের পর বছর শুধু বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে ভালো শেয়ারের তালিকায় স্থান করে নিচ্ছিল, তাদের সে সুযোগ বন্ধ হলো। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনের নেওয়া এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়। শিগগির এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে।
বর্তমানে শেয়ারবাজারে রুগ্ণ বা জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানি ৫৩টি। এর মধ্যে প্রায় এক ডজন কোম্পানি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নেই। বছরের পর বছর অনেক কোম্পানি ব্যবসায়িক কার্যক্রম না থাকায় লোকসান করছে। শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহিও ছিল না বললে চলে। সুশাসন ফেরাতে বর্তমান কমিশন এ বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গতকাল।
কমিশন জানিয়েছে, কোনো কোম্পানি টানা দুই বছর শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হলে বা লোকসান করলে বা অপারেটিং ক্যাস-ফ্লো ঋণাত্মক হলে বা এজিএম করতে ব্যর্থ হলে সেটি জেড ক্যাটাগরিভুক্ত হবে। এ ছাড়া কোম্পানির ব্যবসায়িক বা উৎপাদন কার্যক্রম অন্তত ছয় মাস বন্ধ থাকলে বা পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ সংশ্নিষ্ট কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের বেশি হলেও তা এই ক্যাটাগরিতে চলে যাবে। এর বাইরে বিদ্যমান বিধান ভঙ্গ করলে কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে সেটিকে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠাতে পারবে স্টক এক্সচেঞ্জ।
কমিশন বলছে, কোনো কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিভুক্ত হওয়ামাত্র সেটির সব উদ্যোক্তা ও পরিচালকের শেয়ার বিক্রি, হস্তান্তর, বন্ধক প্রদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে এজিএম করতে হবে। এতে ই-ভোটিং ব্যবস্থায় শেয়ারহোল্ডারদের মতামত দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। টানা দুই বছর জেডে রয়েছে এমন কোম্পানিগুলোকে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে পর্ষদ পুনর্গঠন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে ওই কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা তালিকাভুক্ত অন্য কোনো কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারবাজার সংশ্নিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে থাকার যোগ্যতা হারাবেন। এসব কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেবে এবং বিশেষ অডিটের ব্যবস্থা করবে। পুনর্গঠিত পর্ষদ পরবর্তী চার বছরে কোম্পানিকে লাভজনক পর্যায়ে উন্নীত করতে না পারলে তালিকাচ্যুত করবে স্টক এক্সচেঞ্জ।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম